বাংলাদেশ

গোপালগঞ্জে গ্রেফতার আতঙ্ক

গোপালগঞ্জে ৩ দিন কারফিউ জারির পর শনিবার (১৯ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। সকাল থেকেই যানবাহনসহ সাধারণ মানুষের চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে গ্রেপ্তারের আতঙ্ক এখনও সাধারণ মানুষের মধ্যে রয়ে গেছে। শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাতে জেলাজুড়ে যৌথ বাহিনীর অভিযান ছিল। এনসিপির কর্মসূচিকে ঘিরে জেলায় ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জেলার ৫টি উপজেলায় একই অবস্থা। সকালে ঘটনাস্থলে দেখা গেছে, শহরের প্রতিটি রাস্তায় সাধারণ যানবাহন চলাচল করছে। সাধারণ মানুষও দৈনন্দিন কাজে বেরিয়ে পড়েছেন। তবে শনিবার জেলা শহর সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের কিছু দোকান খোলা থাকলেও বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসকের বাসভবনের সামনে ব্যারিকেড স্থাপন করা হয়েছে। সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মাঝেমধ্যে রাস্তায় পুলিশের টহল গাড়ি দেখা গেছে। তবে, নিরীহ সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। ভ্যান চালক কাদের গাজী বলেন, কারফিউর কারণে গত ২ দিন ধরে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। শনিবারও পরিস্থিতি প্রায় একই রকম ছিল। রাস্তায় খুব কম যাত্রী ছিল। তবুও, ক্ষুধার কারণে আমাদের ঘর ছেড়ে যেতে হয়েছে। যদি এই পরিস্থিতি চলতে থাকে, তাহলে আমাদের বেঁচে থাকার জন্য আমরাই দায়ী থাকব। অটোরিকশা চালক মনোজ হীরা বলেন, “গাড়ির ব্যাটারির চার্জ শেষ না হওয়ার জন্য আমি অটোরিকশা নিয়ে আমার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম। রাস্তায় খুব কম লোক আছে। কোনও আয় নেই।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেন, সহিংসতায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা উচিত। কিন্তু আমরা, সাধারণ মানুষ, গ্রেপ্তারের ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারছি না। এদিকে, ১৬ জুলাই পরিস্থিতি বিবেচনায় রাত ৮টা থেকে জেলাজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়। ১৮ জুলাই বিকেলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ কামরুজ্জামান একটি আদেশ জারি করে নির্দেশ দেন যে ১৯ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত জেলায় সান্ধ্য আইন বা কারফিউ বলবৎ থাকবে। পরে রাতেই অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একটি সংক্ষিপ্ত বার্তা পাঠান, যেখানে তিনি জানান যে ১৯ জুলাই সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হবে। তবে জেলার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও বিবৃতি পাওয়া যায়নি। গত ১২ ঘণ্টায় গ্রেপ্তারের কোনও তথ্যও পাওয়া যায়নি।