গাজায় ক্ষুধা সংকট চরমে পৌঁছেছে
জাতিসংঘ জানিয়েছে যে, মানবিক সাহায্য সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় গাজায় আনুষ্ঠানিক ‘দুর্ভিক্ষ’ পরিস্থিতির অবসান ঘটেছে। তবে, সংস্থাটি একটি কঠোর সতর্কতা জারি করেছে যে, ক্ষুধার মাত্রা এবং সামগ্রিক মানবিক পরিস্থিতি এখনও অত্যন্ত সংকটজনক। প্রায় দুই বছরের যুদ্ধে তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় বেশিরভাগ মানুষ তাঁবুতে বসবাস করছে। আটজনের মধ্যে একজন বর্তমানে তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। শীতকালীন বন্যা এবং হাড় হিম করা ঠান্ডা এই মানবিক বিপর্যয়কে আরও অসহনীয় করে তুলেছে। গার্ডিয়ান জানিয়েছে।
খাদ্য নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইপিসির মতে, যদিও গাজার কোনও এলাকা বর্তমানে ‘দুর্ভিক্ষ’ বিভাগে নেই, তবুও পুরো উপত্যকাটি ‘জরুরি’ অবস্থার অধীনে রয়েছে। এটি দুর্ভিক্ষের ঠিক আগে, যেখানে মানুষ খাদ্য ঘাটতিতে মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
অক্টোবরে ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি, যখন সাহায্য প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছিল, তার পর থেকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে, আইপিসি সতর্ক করেছে যে যুদ্ধবিরতি ভেঙে গেলে গাজা আবার দুর্ভিক্ষের কবলে পড়তে পারে। আগামী চার মাসে প্রায় ১৬ লক্ষ মানুষ তীব্র খাদ্য ঘাটতির সম্মুখীন হতে পারে।
তবে ইসরায়েল গাজায় দুর্ভিক্ষ বা সাহায্য আটকে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং আইপিসির প্রতিবেদনকে “ভিত্তিহীন এবং পক্ষপাতদুষ্ট” বলে অভিহিত করেছে। অন্যদিকে, দাতব্য সংস্থা অক্সফাম জানিয়েছে যে, ক্ষুধার মাত্রা এখনও ভয়াবহ এবং ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ সীমান্তে হাজার হাজার খাদ্য প্যাকেজ আটকে রেখেছে।
এদিকে, লক্ষ লক্ষ মানুষ জীর্ণ তাঁবুতে লড়াই করছে, মুষলধারে বৃষ্টি এবং ঠান্ডার সাথে লড়াই করছে। বন্যার ফলে তাঁবু ডুবে যাওয়ার এবং অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতিতে রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, বুধবার ২৯ দিনের একটি শিশু হাইপোথার্মিয়ায় মারা গেছে। বর্তমান যুদ্ধবিরতি ভঙ্গুর। স্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ে পৌঁছানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিশরের মধ্যস্থতায় কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলছে।

