• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    গণভবনে বর্ধিত সভায় শেখ হাসিনা।আমি যাকেই মনোনয়ন দেব তার জন্যই কাজ করতে হবে

    আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দল যাকেই মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    রোববার তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভার সমাপনী বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত তৃণমূল নেতৃবৃন্দকে হাত তুলে দলের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিতে বললে তারা সবাই হাত তুলেন।

    শেখ হাসিনা দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের জনগণের মন জয় করে তাদের আস্থা অর্জনের নির্দেশনা দিয়ে বলেন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আগামী নির্বাচনের জন্য জনমত তৈরি করতে হবে। আবারো বিজয়ের পতাকা নিয়ে এই গণভবনে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। তিনি বলেন, নৌকায় ভোট দিয়ে এদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। আর্থ-সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে। নৌকায় ভোট দেওয়ায় ডিজিটাল বাংলাদেশ পেলাম। খাদ্য নিরাপত্তা অর্জিত হয়। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ গেল। তারা লোকেদের বলে যে তাদের সমর্থন আদায় করতে হবে।

    প্রায় পাঁচ বছর পর অনুষ্ঠিত এই বিশেষ বর্ধিত সভাকে ঘিরে আওয়ামী লীগ তৃণমূল নেতাদের পদযাত্রায় প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে গণভবন চত্বর। গণভবন চত্বরের ময়দানে বর্ধিত সভা মঞ্চ ছাড়াও তৃণমূল নেতাদের জন্য বিভাগীয় ওয়ারী প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। আট বিভাগের নেতাদের জন্য আলাদা প্যান্ডেল ছিল।

    দলের জাতীয় কমিটি, কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা ছাড়াও জেলা/মহানগর ও উপজেলা/থানা/পৌরসভা (জেলা সদরে অবস্থিত পৌরসভা) শাখার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় সংসদের দলীয় সদস্য, পার্টির চেয়ারম্যান। জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদ, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার দলীয় সদস্যরা। সভায় মেয়র ও দলের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন। এ সভায় সব মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন।

    সকালে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ‘শত সংগ্রাম ও হাজার গৌরবে শক্তিশালী বাংলাদেশ’ শীর্ষক বৈঠক শুরু হয়। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ শেষে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন দলের মহাসচিব ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। আওয়ামী লীগ প্রধানের সূচনা বক্তব্যের পর তৃণমূল নেতারা বক্তব্য দেন। বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সমাপনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বর্ধিত সভা শেষ হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. আবদুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।

    আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ওপর দলের ক্ষমতায় আসা নির্ভর করছে। এটা মাথায় রেখে আমাদের আস্থা রাখতে হবে। কারণ, মনোনয়ন দেওয়ার সময় আমাদের মাথায়ও এটা থাকতে হবে, মনোনয়ন দিলে সেই আসন আমরা ফিরে পাব।’

    দলের মনোনয়ন প্রক্রিয়া তুলে ধরে তিনি বলেন, অনেক সময় খবর পাই, মাঝে মাঝে মেসেজও পাই- আওয়ামী লীগের কেউ সংসদ সদস্য বা এলাকার কোনো নেতার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছেন। উপরের দিকে থুথু দিলে তা নিজের গালে পড়ে।

    তিনি বললেন, “অনেক এসএমএস পাঠালে আমরা কারো গসিপ শুনব!” স্পষ্ট করে বলতে গেলে, আমি তা শুনব না। কারণ আমার নিজের অ্যাকাউন্ট আছে। আমার একটা পরিকল্পনা আছে. আমরা জরিপ করি। তার অবস্থানের ভিত্তিতে আমরা মনোনয়ন দেই।

    আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর কেউ কেউ মনে করেন আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেয়নি। সিট না পেলে কি হবে? বাকি আসনগুলো আমি পাব। ক্ষমতায় যাব। তাই আমরা হারিয়ে ফেলি। হারান এবং আপনার ক্ষমতা দেখান. আর দেখাতে গিয়ে পুরোটা হারাবেন আর তার পরে?’

    তিনি বলেন, ২০০১ সালে হারার পর বিএনপির অত্যাচার-নির্যাতনের কথা কি কারো মনে আছে? সবাই ভুলে যায়নি। আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় না এলে নেতাকর্মীদের ওপর কী অত্যাচার হবে! আর বাংলাদেশের কি হবে? তারা ডাকাত। তারা ২০০১-২০০৬ এর মত লুট করবে। হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে এখন সেই টাকা খরচ করে। এখন খালেদা জিয়ার ছেলে লন্ডনে বসে আছে। সব ধরনের অপকর্ম করা হয়েছে।

    প্রধানমন্ত্রী দলীয় নেতাদের তার সরকারের সাড়ে ১৪ বছরের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও অর্জন তৃণমূলের কাছে তুলে ধরার নির্দেশ দিয়ে দলের নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আমরা যা করেছি তা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আপনি যতক্ষণ বসে বসে পরস্পরকে নিয়ে গপ্পো করছেন, একে অপরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছেন- এই সময় নষ্ট করবেন না, জনগণকে বলুন আপনি মানুষের জন্য কী করেছেন।