খুলনায় ভৈরব সেতু নির্মাণ।প্রকল্পের মেয়াদ শেষ ১৯ শতাংশ অগ্রগতি
খুলনার দিঘলিয়ায় ভৈরব নদীর উপর ভৈরব সেতু নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শেষ হয় বিদায়ী বছরের ডিসেম্বরে। ধীরগতির কারণে প্রকল্পের মেয়াদ শেষে মূল সেতু নির্মাণে মাত্র ১৯ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। এ নিয়ে দিঘলিয়াবাসী ক্ষুব্ধ। এখন প্রকল্পের মেয়াদ আরও দেড় বছর বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
১৭ ডিসেম্বর, ২০১৯-এ, ভৈরব সেতু নির্মাণ প্রকল্প একনে দ্বারা অনুমোদিত হয়েছিল। ২৭ জুলাই ২০২০-এ প্রকল্পের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। ২৬ নভেম্বর, ২০২০-এ ওয়াহেদ কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল। এর পরে, ২৪ মে ২০২১ তারিখে টেস্ট পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু করোনা মহামারী এবং জমি অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে কাজ বিলম্বিত হওয়ার কারণে প্রকল্পের অর্ধেকও শেষ করা যায়নি। নির্ধারিত সময়।
ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৩৪ শতাংশ। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬১৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১৩৩ কোটি ২১ লাখ টাকা।
দিঘলিয়া গ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল আলম ও দেয়ারা গ্রামের কামরুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রকল্পের কাজ অত্যন্ত ধীরগতিতে চলছে। কবে নাগাদ কাজ শেষ হবে তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে সড়ক ও গণসড়ক অধিদপ্তর খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন, মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। তবে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় বাড়বে না।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের জন্য খুলনা নগরীর দৌলতপুর থানার মহসিন মোড় থেকে ভৈরব নদী হয়ে দিঘলিয়া উপজেলার মোড় পর্যন্ত জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। প্রায় ২.২৬৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ১৭.৪৯ একর জমি অধিগ্রহণ করা প্রয়োজন।
এর মধ্যে দিঘলিয়া উপজেলায় ১০ দশমিক ৩৭ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। যা গত ৩১ আগস্ট জেলা প্রশাসক সড়ক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেন। এছাড়া খুলনা মহানগরীর মহেশ্বরপাশা মৌজার ৪ দশমিক ৫৩ একর ব্যক্তি মালিকানা অধিগ্রহণের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। রেলওয়ের ২.৫৯ একর জমি হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চলের নির্বাহী আর্বোরিকালচার অফিস অধিগ্রহণকৃত জমিতে গাছের জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে, যা ৯ জানুয়ারি খোলা হবে। স্থাপনা বিক্রির মূল্য নির্ধারণের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ গণপূর্ত বিভাগকে চিঠি দিয়েছে। মূল্য নির্ধারণ হয়ে গেলে দরপত্র আহ্বান করা হবে।
সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য হবে ১ দশমিক ৩১৬ কিলোমিটার। আর অ্যাপ্রোচ রোড হবে নগরীর মহসিন মোড় থেকে খুলনার প্রান্তে ভৈরব নদ পর্যন্ত ১.২৭ কিলোমিটার এবং ভৈরব নদী থেকে দিঘলিয়া প্রান্তে উপজেলা মোড় পর্যন্ত ২ কিলোমিটার।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান মাসুদ প্রকল্পের ধীরগতি সম্পর্কে বলেন, জমি অধিগ্রহণ ও করোনার কারণে মূল সেতু নির্মাণে বিলম্ব হয়েছে। তারা ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। আশা করা হচ্ছে বর্ধিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ হবে।