খালেদা জিয়ার সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে: বিবৃতিতে ইউট্যাব
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। সময় নষ্ট না করে অবিলম্বে তার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ সোমবার ইউট্যারে সভাপতি অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ মোঃ মোরশেদ হাসান খান এ আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। বর্তমানে তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড একাধিকবার পরামর্শ দিয়েছে যে খালেদা জিয়া মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। দেশে তার চিকিৎসার কিছুই অবশিষ্ট নেই। কারণ তার চিকিৎসার জন্য যে ধরনের যন্ত্রপাতি দরকার তা বাংলাদেশে নেই। ফলে খালেদা জিয়াকে বাঁচাতে তাকে বিদেশে উন্নত কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া খুবই জরুরি। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, জনগণের ম্যান্ডেটবিহীন আওয়ামী লীগ সরকার এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। বরং খালেদা জিয়ার সঙ্গে অমানবিক ও অসাংবিধানিক আচরণ করা হচ্ছে। আমরা সরকারকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে মানবিক দিক বিবেচনা করে অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানাই। এ ব্যাপারে আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, দলীয় সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি ও সহিংসতা বিরোধী মনোভাব পরিহার করে গণতান্ত্রিক পথে চলার জন্য। অন্যথায় সরকার দায় এড়াতে পারবে না। এছাড়া গত শুক্রবার খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে ইউনাইটেড হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স সহায়তা দিতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য ইউটিএবি-র শীর্ষ দুই নেতা তীব্র নিন্দা ও নিন্দা জানান।
তারা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বয়স এখন ৭৯ বছর। সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পেলেও বৃদ্ধ বয়সেও কার্যত কারাবন্দী খালেদা জিয়া। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যাওয়ার পর তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। দীর্ঘ চার বছর ধরে তিনি কোনো সঠিক চিকিৎসা পাননি। কারাগারের অমানবিক পরিবেশে তিনি অনেক নতুন রোগে আক্রান্ত হন। হার্ট, লিভার, কিডনি এবং চোখের সমস্যা ছাড়াও, পুরানো বাত এবং নতুন কোভিড-১৯ এবং কোভিড-পরবর্তী জটিলতার কারণে তার শারীরিক অবস্থা খুবই নাজুক।
ইউট্যাব’র দুই নেতা বলেন, সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে অমানবিক আচরণ করছে। যা সংবিধান লঙ্ঘন। তারা যেভাবে তার মানবাধিকার ও মানবতা হরণ করছে, সত্যিকারের গণতান্ত্রিক সরকার থাকলে তা করা যেত না। দেশে আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকলে এমনটা হতো না।
ইউটিএবি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, খালেদা জিয়া তিনবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করেছেন। তিনি বিএনপির মতো দেশের অন্যতম বৃহৎ ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসন। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি এদেশের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি কখনো অন্যায়ের সাথে আপস করেননি। মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, বহুদলীয় গণতন্ত্র, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং এদেশের উন্নয়নে খালেদা জিয়া অসামান্য অবদান রেখেছেন।