কেন বারবার লোডশেডিং কি বলছে পিডিবি
পবিত্র রমজান মাস। মানুষ একটু আরামে থাকতে চায়। কিন্তু তীব্র লোডশেডিংয়ে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। লোডশেডিং দিয়ে শুরু হয় চট্টগ্রামের মানুষের ভোর। শেষ হয় লোডশেডিংয়ে। গতকাল ভোর ৪টা থেকে লাভ লেন এলাকায় লোডশেডিং শুরু হয়। ইফতার পর্যন্ত ১২ বার বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ চলে গেলে এক থেকে দেড় ঘণ্টা লোডশেডিং থাকে। এটা শুধু লাভ লেনে নয়, পুরো চট্টগ্রামের। পিডিবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চট্টগ্রামে চাহিদার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। চট্টগ্রামে এখন গড় বিদ্যুতের চাহিদা ১২০০ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ২ হাজার মেগাওয়াটের মতো। কিন্তু তারপরও চট্টগ্রামে লোডশেডিং করা হচ্ছে। খবরে বলা হয়, এই রমজানে ইফতার ও সেহরির সময় ঢাকার কোথাও কোনো লোডশেডিং নেই। ঢাকায় লোডশেডিং না থাকলেও চট্টগ্রামে করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চট্টগ্রাম অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অশোক কুমার চৌধুরীর কাছে চট্টগ্রামে উৎপাদন ও লোডশেডিং সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চট্টগ্রামে উৎপাদন ভালো চলছে। বুধবার চট্টগ্রামে দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। চট্টগ্রামে দৈনিক চাহিদা ছিল ১২৫০ মেগাওয়াট। কিন্তু মাদারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত পিজিসিবি ন্যাশনাল পাওয়ার গ্রিডের সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ না হওয়ায় এ স্টেশনের বিদ্যুৎ যাচ্ছে মেঘনা ঘাটে। চট্টগ্রামে আজ (গতকাল) ভোট বিকাল ৪টা থেকে ইফতার পর্যন্ত ২৫০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে। কিন্তু ইফতারের পর আর লোডশেডিং ছিল না।
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অশোক কুমার চৌধুরী জানান, মাদারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৮০০ মেগাওয়াট এবং বাঁশখালীতে অবস্থিত এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে। এছাড়া শিকলবাহা ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ২২৫ মেগাওয়াট, কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৬০ মেগাওয়াটসহ অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। এখন আমরা রমজান মাসে ইফতার-সেহরিতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, পিজিসিবি বিদ্যুৎ বিভাগের একমাত্র প্রতিষ্ঠান যা জাতীয় পাওয়ার গ্রিডের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য গ্রিড সাবস্টেশন এবং ট্রান্সমিশন লাইনের অপারেশন, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং সম্প্রসারণে নিয়োজিত। চট্টগ্রামের মদুনাঘাট গ্রিড ১৩২ কেভি (এক লাখ বত্রিশ হাজার ভোল্ট) লাইনের মাধ্যমে কক্সবাজারসহ তিন পার্বত্য জেলাসহ সমগ্র চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। চট্টগ্রামের সব বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ মদুনাঘাট থেকে গ্রিড ট্রান্সমিশন লাইনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়। মদুনাঘাট গ্রিড সাব-স্টেশন মাদারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাথে সংযুক্ত নয়। কাজ শেষ করতে আরও সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।