কেএসআরএম বিরুদ্ধে ২৩১ কোটি ভ্যাট ফাঁকির মামলা
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, কেএসআরএম গ্রুপের বিরুদ্ধে ২৩১ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির জন্য মামলা করেছে। ক্রয় -বিক্রয়ের তথ্য গোপন করে কোম্পানিটি গত পাঁচ বছরে ২৩১ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এছাড়া কোম্পানির কেনা একটি জাহাজও হাইকোর্টের নির্দেশে জব্দ করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, কেএসআরএম জালিয়াতির মাধ্যমে জাহাজটি কিনেছিল।
গত ২২ জুন চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, কোম্পানির একটি কারখানায় অভিযান চালায়। অভিযানকারী দলটি কোম্পানির বাণিজ্যিক দলিলাদি এবং দুটি কম্পিউটার জব্দ করে।
ক্রয় -বিক্রয়ের তথ্য গোপন করে জব্দ করা দলিলাদি থেকে এই বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকির তথ্য বেরিয়ে এসেছে। যদিও কাঁচামাল ক্রয় সহ সকল ক্রয়ের উপর ভ্যাট কর্তনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে, কিন্তু কেএসআরএম এটি মেনে চলেনি। তারা ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মে পর্যন্ত ক্রয়ের বিপরীতে উৎসে ভ্যাট কর্তনের কোনো দলিলাদি উপস্থাপন করতে পারেনি।
চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোম্পানি উৎপাদিত পণ্যের তথ্য গোপন করে ৮৫ কোটি ২৯ লাখ ১৫ হাজার ৬৯৫ টাকা এবং কাঁচামাল ক্রয়ে উৎসে ভ্যাট বাবদ ১৪৫ কোটি ৮৭ লাখ ৬৮ হাজার ৭৮৪ টাকা ফাঁকি দিয়েছে।
এক্সাইজ ভ্যাট কমিশনারেট কোম্পানির বিরুদ্ধে ফাঁকি দেওয়া অর্থ উদ্ধারের জন্য প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে।
জানতে চাইলে, কাস্টমস, এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট কমিশনারেট চট্টগ্রামের কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন বলেন,
যতই শক্তিশালী লোকই হোক, যতই প্রভাবশালী লোকই হোক না কেন, কেউ যদি ভ্যাট ফাঁকি দেয়, কেউ যদি সরকারি রাজস্ব কোষাগারে সঠিকভাবে জমা না করে, তাহলে আইন সবার জন্য সমান এবং আপনাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।
“একজন ভ্যাট কর্মকর্তা হিসাবে, সরকার আমাদেরকে যে দায়িত্ব অর্পন করেছেন সে দায়িত্ব আমরা পালন করব, এই কর্মকর্তা বলেন।
কেএসআরএম এর মালিকানাধীন খাজা শিপব্রেকিং ইয়ার্ড, সম্প্রতি মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে মামলা থাকা একটি জাহাজ আমদানি করে।
অভিযোগ আছে যে জাহাজের নাম পরিবর্তন করে এমটি ম্যাডার, তৃতীয় পক্ষের কাছে স্থানান্তরের ঘটনায় এখন তোলপাড় নৌ সেক্টরে । ওই শিপইয়ার্ডে একজন শ্রমিকের মৃত্যুর কারণে শিল্প মন্ত্রণালয় জাহাজ আমদানি স্থগিত করেছিল। আদালতের আদেশে নৌ পুলিশ ৮ জুলাই ইয়ার্ড থেকে জাহাজটি জব্দ করে।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার, নৌ পুলিশ মো. মমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, আমরা জাহাজটিকে লোকেট করে জব্দ করেছি এবং আদালতকে এ বিষয়ে অবহিত করেছি।
কেএসআরএম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম বলেন, “আমাদের কোন জাহাজই এমটি ম্যাডার না, এমটি মেট । এই জাহাজটি আমাদের কবির স্টিল কিনেছেন এবং সেই জাহাজটি এখন আমাদেরে ইয়ার্ডে আছে। আমি এ বিষয়ে আর কিছু বলতে চাই না। কারণ এই মুহূর্তে এটি সাব-জুডিশিয়াল ইস্যু।
জানা গেছে, মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাহাজটি আনাই তা কাটার ব্যাপারে আগের দেওয়া অনুমোদন ও বাতিল করেছে নৌ বাণিজ্য দপ্তর।
এর আগেও, কেএসআর এর শুল্ক ও ভ্যাট ফাঁকির ঘটনা উদ্ঘাটন করে কাস্টমস ও ভ্যাট।