• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    কুশিয়ারা নিয়ে আপস।শেখ হাসিনা তিস্তা ইস্যু তুললেন, মোদি এড়িয়ে গেলেন

    বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বৈঠকের পর কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে দুই দেশের মধ্যে। বৈঠক শেষে শেখ হাসিনা তিস্তাসহ অভিন্ন নদীগুলোর সমস্যা দ্রুত সমাধানের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তবে বহুল প্রত্যাশিত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে কিছু বলেননি নরেন্দ্র মোদি।

    বৈঠক শেষে শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করিয়ে দিতে চাই যে দুই দেশ বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে অনেক অসামান্য সমস্যার সমাধান করেছে। আমরা আশা করছি, তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তিসহ অমীমাংসিত সব সমস্যার সমাধান হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ যে আমরা কুশিয়ারা নদীর সমস্যা সমাধান করেছি। বাকি সব অভিন্ন নদী সমস্যার সমাধান আশা করছি। আমি জানি, নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ ও ভারত তাদের সব সমস্যার সমাধান করতে পারে।

    তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমরা ইতোমধ্যে আলোচনার মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান করতে পেরেছি। প্রতিবেশীদের মধ্যে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এগুলো সমাধান করা যায়, সেই উদাহরণ আমরা দেখিয়েছি।

    বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে মোদি নদীর পানি সমানভাবে বণ্টনের বিষয়টি উল্লেখ করলেও তিস্তার বিষয়টি উল্লেখ করেননি। দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে। যুগ যুগ ধরে এই নদীগুলো এখানকার মানুষের জীবন-জীবিকার সাথে জড়িত। এসব নদী নিয়ে গল্প, লোকগানও আমাদের অভিন্ন সংস্কৃতির সাক্ষী। আজ আমরা কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছি। এতে ভারতের দক্ষিণ আসাম এবং বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চল উপকৃত হবে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেছি। ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে পানি প্রবাহের বাস্তব-সময়ের তথ্য বিনিময় করে আসছে। বৈঠকে আমরা তথ্য আদান-প্রদান বাড়াতে সম্মত হয়েছি।

    বৈঠকে উপস্থিত একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের সফরে কী ধরনের চুক্তি বা সমঝোতা হবে তা আগেই ঠিক করা হয়। এক শতাব্দী পর অভিন্ন নদী নিয়ে গত ২৫ আগস্ট দুই দেশের পানিসম্পদ মন্ত্রী পর্যায়ের যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা এটাকে ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখছে। ভারত দীর্ঘদিন ধরে বৈঠকে যোগ দেয়নি।

    সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের আগে জেআরসি রাখা এবং দিল্লিতে মমতার সঙ্গে মোদির বৈঠককে ঢাকা ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে ভারত তিস্তা চুক্তি আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে হস্তান্তর করবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য দিল্লিতে আমন্ত্রণ পাননি মমতা।

    ২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বাংলাদেশ সফরকালে তিস্তা চুক্তিতে স্বাক্ষর করার কথা ছিল। তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির কারণে চুক্তিটি বাস্তবায়িত হয়নি। আর তখন থেকেই তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির বিষয়ে ভারত বাংলাদেশকে শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে।

    মন্তব্য করুন