‘কী করে ভুলবো সেই কষ্টের স্মৃতি’
মাটির ঘর উপরে টিনের চালা। ছোট্ট পাহাড়ের নিচে ওই বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকেন নুর আহমদ। এই বাড়ি নাইক্ষ্যনছড়ির তুমব্রুর উত্তরপাড়ায়। ২৮ আগস্ট মিয়ানমার সীমান্তের ওপার থেকে নুর আহমদের বাড়ির উঠানে মর্টার শেল পড়ে। রবিবার ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি মর্টার শেল পড়ে একটা বড় গর্ত।
নুর আহমদের স্কুল পড়ুয়া ছেলে আল শাহরিয়ার জানান, ঘটনার দিন সে তার বোন সাদেকার সঙ্গে বাড়ির পেছনে খেলছিল। বাবা-মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা বাড়িতে ছিলেন না। বেলা ৩টার দিকে মাটির ঘর বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে। কিছুক্ষণ পর আশেপাশের বাড়ির লোকজন চিৎকার করতে থাকে। তখন দেখলাম উঠানে মর্টার শেল পড়ে আছে। সবাই ভয় ও আতঙ্কে হতবাক। খবর পেয়ে বাড়িতে ছুটে আসেন শাহরিয়ারের বাবা-মা।
শাহরিয়ার আরও বলেন, ‘ঘটনার পর ভয়ে দুই দিন বাড়িতে কেউ ছিল না। আমরা চাচার বাসায় গেলাম। বাড়ি ফিরেও আতঙ্কের শেষ নেই। কী করে ভুলব সেই কষ্টের স্মৃতি! ওই ঘটনার পর গুলির শব্দ শুনে মনে হয় উঠানে হয়তো আবার কিছু পরবে। ভয়ে রাতে ঘুমাতেও যায় না।
শাহরিয়ারের বাড়ির সামনে তিনটি ছোট বাড়ি। সৈয়দ আমিন, সুলায়মান ও রুহুল আমিন পরিবার নিয়ে থাকেন। তাদের বাড়ির পেছনে নুর আহমদের উঠোন। সৈয়দ আমিনের নাতনি উম্মে হাবিবা বলেন, মর্টার শেল আম গাছের ডাল ভেঙে নিচে পড়ে যাই। পরে প্রশাসনের লোকজন এসে মর্টার শেল নিস্ক্রিয় করে।
শুক্রবার তুমব্রুর উত্তরপাড়ার কাছে প্রতিরক্ষা লাইনে একটি মর্টার শেল পড়ে। এতে একজন রোহিঙ্গা নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। উত্তরপাড়ার বাসিন্দারা নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন। তারা বলছেন, নূর আহমেদের উঠোনে পড়ে থাকা মর্টারটি বিস্ফোরিত হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটত। ওই এলাকার বাসিন্দা। ইব্রাহিম জানান, উত্তরপাড়ায় দুবার ও কোনাপাড়ায় একবার মর্টার শেল এসেছে।