কিশোরগঞ্জে টার্মিনালে হামলা, সব রুটের সব বাস চলাচল বন্ধ
কিশোরগঞ্জের আন্তঃজেলা গাইতাল বাস টার্মিনালে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় শ্রমিক সংগঠনের সভাপতিসহ চারজন আহত হন। লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে পুলিশ ১১ রাউন্ড গুলি ছোড়ে।
এ ঘটনার জেরে সোমবার টার্মিনাল থেকে ৬টি রুটের সব বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঘটনার পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মালিক সমিতি ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন।
টার্মিনালে গিয়ে মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন মানিক, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মুরাদ রেজা ও শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল কাইয়ুমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টার্মিনাল থেকে পরিবহন কোম্পানির ৪০টি গাড়ি যাতায়াত করত। কোম্পানির চেয়ারম্যান মানিক সরকারের কাছে কোম্পানির অন্য মালিকদের কাছে টিকিট বিক্রি বাবদ ১২ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। এ কারণে মানিক সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা অন্তত ২০টি গাড়ি টার্মিনাল থেকে চলাচল বন্ধ রয়েছে।
তারা জানান, মালিক সমিতির নেতাদের মধ্যস্থতায় মানিক সরকার ৩০ নভেম্বর বকেয়া পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিলেও ২৯ নভেম্বর তিনি মালিক সমিতির নেতাদের জানান, ৬ ডিসেম্বর টাকা দিয়ে ৭ ডিসেম্বর থেকে গাড়ি চালাবেন। এমনকি এই তারিখেও তিনি টাকা পরিশোধ করেননি।
এমতাবস্থায় আজ বেলা ৩টার দিকে টার্মিনাল কার্যালয়ে শ্রমিক নেতারা এ বিষয়ে মতবিনিময় সভা করলে মানিক সরকারের পক্ষ থেকে কাঞ্চন, বাবু, মামুন, শাহজাহান, রাসেলসহ অন্তত ২০ বিদেশি রামদা দেশি-বিদেশি হামলা চালায়। অস্ত্র কাইয়ুম নিজেই জানান, শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি আব্দুল কাইয়ুমসহ চারজন আহত হয়েছেন।
এদিকে সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ দাউদ জানান, উত্তেজনার আভাস পেয়ে পুলিশ আগে থেকেই টার্মিনালে অবস্থান নেয়। হামলার সময় তিনি নিজেও উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ করে। শেষ পর্যন্ত ১১ রাউন্ড গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি, কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
এদিকে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোঃ মোস্তাক সরকার, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল আমিন হোসেন, সদর থানার ওসি মোহাম্মদ দাউদ, মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন মানিক, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মুরাদ রেজা ও শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম ও মো. অন্যান্য নেতারা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে বৈঠকে বসেন।
হামলার পর থেকে টার্মিনাল থেকে ছয়টি রুটের সবকটিই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোস্তাক সরকার জানান, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা চলছে।