• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে

    রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা স্বাভাবিক হারে কমেছে। শিগগিরই ভারী বর্ষণ না হলে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে চারটিই দেড় মাস বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে।

    এ অবস্থায় জেলা সদরসহ ছয় উপজেলার নৌপথে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে উপজেলাবাসীর অবর্ণনীয় দুর্ভোগের পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থনীতিতেও বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

    কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সহ পাঁচটি ইউনিট রয়েছে। পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় গত দেড় মাস ধরে চারটি ইউনিট বন্ধ রয়েছে। একটি ইউনিট উৎপাদন করছে মাত্র ২৫ মেগাওয়াট। গতকাল রবিবার পর্যন্ত নিয়ম বক্ররেখা অনুযায়ী, লেকের জলস্তর ৭৬ ফুট এমএসএল (মেইন সি লেভেল)।

    এদিকে জেলা সদরসহ বরকল, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, নানিয়ারচর, লংগদু ও বিলাইছড়ি উপজেলায় লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ছোট ছোট নৌকায় করে চলাচল করছেন এসব উপজেলার বাসিন্দারা। পানি কমার সাথে সাথে ভাসমান দ্বীপ বা গাছের গুঁড়ির কারণে অনেক দুর্ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়া উপজেলা সদর ঘাটে পৌঁছাতে না পারায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। আবার উৎপাদিত পণ্য সঠিকভাবে বাজারজাত করতে না পারায় লোকসানের মুখে পড়ছেন কৃষকরা।

    লঞ্চে ওঠার আগে একজন যাত্রীকে জেলা থেকে উপজেলায় যেতে হলে খরচ হতো ১০০ টাকা। এখন খরচ করতে হচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। এসব নৌপথে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মানুষের চলাচল কমে গেছে।

    রাঙামাটি লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি মো. মঈন উদ্দিন সেলিম জানান, লেকের পানি কমে যাওয়ায় ইতোমধ্যে ছয়টি উপজেলা দিয়ে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে ছোট ইঞ্জিনচালিত নৌকাগুলো কোনো না কোনোভাবে চলাচল করছে, এমনকি উপজেলা সদরেও পৌঁছানো যাচ্ছে না।

    কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আবদুজ্জাহ বলেন, “আমরা প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল। এই অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত কাপ্তাই প্ল্যান্টে বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক নয়।

    ১৯৬০ সালে কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বাঁধ দেওয়া হয়। এই বাঁধটি ২৫৬ বর্গ মাইল এলাকা জুড়ে একটি বিশাল জলাধার তৈরি করেছে। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম মানবসৃষ্ট হ্রদ।

    মন্তব্য করুন