কাউন্সিলর প্রার্থীর ভাই নিহত
পটিয়ায় গুলি,সংঘর্ষ অগ্নিসংযোগ।এক প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগ। জাপা ভোট বর্জন করেছেন
পটিয়া পৌর নির্বাচনে গুলিবিদ্ধ ও ছুরিকাঘাতে কাউন্সিলর প্রার্থীর এক ভাই নিহত হয়েছেন। তার নাম মোঃ আব্দুল মাবুদ (৫০)। তিনি পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুল মান্নানের ছোট ভাই। রবিবার দুপুর বারোটায় পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ গোবিন্দরখিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রের বাইরে এ ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে ভোটকেন্দ্র এলাকায় স্থানীয় আনসার ভিডিপি ক্লাব এবং বেশ কয়েকটি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় ২০ রাউন্ড গুলি চালানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, কেন্দ্রের বাইরে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালীন আবদুল মাবুদকে ছুরিকাঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তিনি নিহত হন।
এ ঘটনায় ১৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে মোঃ হাসান (২৩), মোবাসিক জান্নাত (৩০), মোঃ ফাহিম (১৮), আবদুল আল মাহমুদ (১৮), নুসরত (২০), জালাল উদ্দিন (২৫), মোঃ আশেক, ২৫, এবং ইদ্রিস, ৮০, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, ডিবি পুলিশ এবং ম্যাজিস্ট্রেটদের পৃথক দল এই কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে দুই কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুল মান্নান (ডালিম) ও সরোয়ার কামাল রাজিব (অস্ট্রিচ )কে গ্রেপ্তার করে। এই মুহুর্তে কিছুক্ষণের জন্য ভোটদান বন্ধ ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ এরশাদ জানান, সকালে সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ সত্ত্বেও দুপুরে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গুলিবর্ষণ হয়। কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুল মান্নানের ভাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। আহতদের পটিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পৌর নির্বাচন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: এনামুল হাসান জানান, গুলি ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর দুই কাউন্সিলর প্রার্থীকে আটক করা হয়। দুই প্রার্থীকে গ্রেপ্তারের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার বলেন, আমি শুনেছি পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। তবে আমি এখনও বিস্তারিত কিছু জানি না।
পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুর রহমান জানান, দুই প্রার্থীকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। যেহেতু একটি কেন্দ্রে বিশকা্রখলা হয়েছে,সে জন্য তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে কাউন্সিলর প্রার্থী শফিউল আলম ও রুবেল দাস বাবু সমর্থকরা একে অপরকে ধাওয়া করে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। আহত হয়েছেন প্রায় ৪ জন। যদিও সকাল আটটা থেকে সাড়ে এগারটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ছিল, তবে দুপুর বারোটা থেকে আক্রমণ হয়। ৮নং ওয়ার্ডে আক্রমণ কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ থাকার পরে প্রায় এক ঘন্টা পর ভোটগ্রহণ পুনরায় শুরু হয়।
জাপা বর্জন: প্রহসনের অভিযোগ তুলে দুপুর ২ টায় জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী ও দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শামসুল আলম মাস্টার ভোট বর্জনের ঘোষণা করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন যে তিনি ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর সমর্থকরা কেন্দ্র দখল এবং নৌকা প্রতীকে জোর করে ভোট দেওয়ার সহ বিভিন্ন জালিয়াতির অভিযোগে বয়কট করেছেন।
কাউন্সিলর প্রার্থীর অপহরণ: দায়িত্বরত কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুল খালেক (ডালিম) ১নং ওয়ার্ডে অপহরণ করা হয়েছে। গতকাল ভোটগ্রহণের দিন সকাল থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। তার কর্মী সমর্থকরা বলছেন যে বিরোধী কাউন্সিলর প্রার্থী তাকে অপহরণ করেন যাতে তিনি নির্বাচনে জিততে পারেন ।
দুপুর বারোটায় সাংবাদিকদের বলেন, বিরোধী কাউন্সিলর প্রার্থী। নাসিরের লোকেরা তাকে অপহরণ করে। পরে তাকে চোখে বেঁধে বেঁধে দুপুরে মহাসড়কে ফেলে দেওয়া হয়। তিনি অভিযোগ করেন যে তাঁর বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন যে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ করবেন।
পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার জানান, তাকে অপহরণ করা হয়েছে বা অন্য কোনও ঘটনা ঘটেছে কিনা তা এখনও জানা যায়নি। এ বিষয়ে এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। কোনও অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।