• বাংলা
  • English
  • বিবিধ

    কষ্টে তিন প্রজন্ম

    হাজরা খাতুন ১৬ বছর বয়সে বিয়ে হয় তার। তিনি এখন দুই সন্তানের জননী। তাদের একজনের বয়স ছয় বছর। ইট ভাটাতে কাজ করার সময় এক বছর আগে হার্ট অ্যাটাকের কারণে স্বামী সাইফুল্লাহ মারা যান। এই পরিস্থিতিতে হাজরা তার দুই সন্তানের সাথে মায়ের কাছে আশ্রয় নিয়েছে। তিনি যখন দুই বছর বয়সে পিতা আবদুল হামিদ তার মা হাফিজা খাতুনকে ছেড়ে অন্য কোথাও বিয়ে করেন। এর পর থেকে মা এবং কন্যা হাজরার দাদার বাড়িতে আশ্রয় নেন।

    খুলনার কয়রা উপজেলার কালনা গ্রামের সরকারী পুকুরের পূর্ব তীরে তাদের দাদা-দাদিদের রেখে যাওয়া কুঁড়েঘর এখন তাদের নিজস্ব বাড়ি। হাজরার দাদা এরফান ধালী বেঁচে ছিলেন না। ননী খায়ান্ট বিবি (৮৫) অন্ধ এবং বধির। ১৫ বছর আগে স্বামীর পরিত্যক্ত হওয়ার পরে যেমন হাজরার মা হাফিজা তার অন্ধ মায়ের বাড়িতে চলে এসেছেন, তেমনি হাজরা অকালে স্বামীকে হারিয়ে তার নানীর কাছে চলে আসেন। এই তিন অসহায় নারীর জন্য এখন জীবন দুঃখের হয়ে উঠেছে।

    হাজরা খাতুন বলেন, ‘আমাগ বারবার ভাগ্যের জন্য হাইয়ারে যাচ্ছেন। আমি আমার জীবনে কতটা খুশি হব তা দেখতে পাচ্ছি না। তবে, দু’টি ছাগলের খাতিরে আমি কিছুটা মানসিক প্রশান্তি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। ‘

    হাফিজা খাতুন বলেন, ‘কি আর কাবো, কল পুর না হলি মায়দা অকাল বেডবা (বিধবা)। আমার দিকে তাকানোর মতো কোনও পুরুষ নেই। আমরা পৃথিবীতে লোক না থাকার জ্বালা বুঝতে পারি। মা অন্ধ, আমার নিজের শরীর ভাল নেই। মাইদার যদি কাজ করার উপায় হতেন তবে আমার ব্যথা কমে আসত। ‘

    কালনা বাজারের ব্যবসায়ী মহসিন মোল্লা বলেন, অসহায় পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ । তিনি অসহায় পরিবারের জন্য সরকারের সহায়তার দাবি জানান।

    স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম বাবুল বলেন, গ্রামের অনেক অভাবী পরিবারের মধ্যে এই পরিবারের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। তাদের অসহায়ত্ব বিবেচনা করে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করছি। তাদের জন্য স্থায়ী কিছু করার কথা ভাবছি।

    মন্তব্য করুন