করোনা সতর্কতায় লতা মঙ্গেশকরের বাড়ি সিলগালা
লতা মঙ্গেশকরইনস্টাগ্রাম
ভারতে করোনা পরিস্থিতি বেড়েই চলছে। শুধু তা–ই নয়, দেশটিতে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। ভারত সরকার দেশটির জ্যেষ্ঠ নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এরই অংশ হিসেবে পূর্বসতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের বাসভবন সিল করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির অনলাইন সংস্করণ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার দক্ষিণ মুম্বাইয়ের চাম্বালা হিলসে পেডার রোডে প্রভুকুঞ্জ বাড়িটি সিল করে দিয়েছে ব্রিহানমুম্বাই মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন (বিএমসি)। কয়েক দিন আগে ওই বাড়িতে কয়েকজনের করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তবে ৯০ বছর বয়সী ভারতরত্ন সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর সুস্থ আছেন। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে পূর্বসতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে ৯০ বছর বয়সী সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের বাসভবন সিল করা হয়েছে।বিজ্ঞাপন
লতা মঙ্গেশকরের পরিবারের পক্ষে এক বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, ‘প্রভুকুঞ্জ সিল করা হয়েছে কি না, তা জানতে আমাদের কাছে ফোন কলের বন্যা বয়ে গেছে। আমরা জানাতে চাই, আবাসন সোসাইটি ও পৌর কর্তৃপক্ষ মিলে এ ভবন সিল করে দিয়েছে। আমাদের এখানে বহু প্রবীণ মানুষের বসবাস। তাই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়াটা বাধ্যতামূলক। এই সময়ে সহযোগিতাপূর্ণ আবহ ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য গণেশ উৎসবও খুব সীমিতভাবে হচ্ছে।’
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমাদের পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যসম্পর্কিত কোনো অপপ্রচারকে গুরুত্ব দেবেন না। সব প্রকার প্রতিক্রিয়া থেকে বিরত থাকুন।’
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাস, অর্থাৎ ২৮ সেপ্টেম্বর লতা মঙ্গেশকর ৯১ বছরে পা দেবেন। সাত দশক ধরে দর্শক ও সমালোচকের হৃদয় তৃপ্ত করে চলা ভারতীয় সংগীতের এই জীবন্ত কিংবদন্তি সংগীতশিল্পীর ১৯২৯ সালে ভারতের ইন্দোরে জন্ম হয়। কিন্তু তাঁর সংগীত ভারত ছাপিয়ে তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে বিশ্বসংগীতের দরবারে।
‘আমাদের পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যসম্পর্কিত কোনো অপপ্রচারকে গুরুত্ব দেবেন না। সব প্রকার প্রতিক্রিয়া থেকে বিরত থাকুন।’ জানানো হয়েছে লতা মঙ্গেশকরের পরিবারের পক্ষ থেকে।
বিজ্ঞাপন
লতা মঙ্গেশকর তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ১৯৪২ সালে, মারাঠি গান গেয়ে। ১৯৪৬ সালে তিনি প্রথম হিন্দি সিনেমার জন্য গান করেন। বসন্ত জোগলেকরের ‘আপ কি সেবা মে’ ছবিতে তিনি ‘পা লাগু কার জোরি’ গানটি গেয়েছিলেন। দুই বছর পর সুরকার গুলাম হায়দার তাঁকে প্রথম বড় সুযোগ দেন। ‘মজবুর’ ছবিতে ‘দিন মেরা তোরা’ গানটির পর লতাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। সংগীতের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গান রেকর্ডের ইতিহাস আশা ভোঁসলের। তিনি গেয়েছেন প্রায় ১০ হাজার গান। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে রেকর্ডটি ছোট বোন আশার হওয়ার আগে ছিল লতা মঙ্গেশকরের। লতা গেয়েছেন প্রায় সাড়ে সাত হাজার গান। লতা মঙ্গেশকর প্রায় ৩৬টি ভাষায় গান করেছেন। এর মধ্যে আছে বাংলাও। ‘প্রেম একবার এসেছিল নীরবে’, ‘আষাঢ় শ্রাবণ মানে না তো মন’, ‘ও মোর ময়না গো’, ‘ও পলাশ ও শিমুল’, ‘আকাশপ্রদীপ জ্বেলে’সহ আরও অনেক বিখ্যাত বাংলা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।
২০০১ সালে লতা মঙ্গেশকর ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ভারতরত্ন পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৮৯ সালে তিনি দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার অর্জন করেন।