এলএনজির তৃতীয় টার্মিনাল হচ্ছে মহেশখালীর সমুদ্রে।ঘাটতির চাপ সামলাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে
তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ২০১৮ সাল থেকে আমদানি করা হচ্ছে। আমদানি করা এলএনজি থেকে জাতীয় গ্রিডে প্রক্রিয়াজাত গ্যাস সরবরাহের জন্য মহেশখালীর সমুদ্রে দুটি ভাসমান টার্মিনাল (এফএসআরইউ) রয়েছে। এখনো গ্যাসের অভাব রয়েছে। তাই সরকার মহেশখালীর সমুদ্রে আরেকটি টার্মিনাল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০২৩ সালের মধ্যে এই টার্মিনালের মাধ্যমে দৈনিক ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস গ্রিডে আনার আশা করা হচ্ছে। তৃতীয় এফএসআরইউ -এর পরীক্ষা দ্রুত করার জন্য পেট্রোবাংলাকে নির্দেশ দিয়েছে জ্বালানি বিভাগ।
বর্তমানে দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৪২০ কোটি ঘনফুট। পেট্রোবাংলার মতে, গত মঙ্গলবার সারা দেশে ৩১৩ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়। ঘাটতি ছিল ১০৭ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে ৭০ কোটি ঘনফুট আমদানি করা এলএনজি থেকে এসেছে। দেশের গ্যাসক্ষেত্র থেকে ২৪৩ কোটি ঘনফুট পাওয়া গেছে। যদি নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার না করা হয়, তাহলে আগামী বছরগুলিতে গার্হস্থ্য গ্যাসের এই উৎপাদন আরও কমে যাবে। ২০১৮ সালে গ্যাস খাতের মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী, ২০২৫ সালে দেশে গ্যাসের চাহিদা ৪৪০ কোটি ঘনফুট হবে। একদিকে চাহিদা বাড়বে, অন্যদিকে দেশীয় গ্যাস উৎপাদন কমতে পারে। এতে ঘাটতি বাড়বে। এই চাপ সামাল দিতে সরকার তৃতীয় টার্মিনাল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মহেশখালীতে সমুদ্রে বর্তমানে দুটি এফএসআরইউ রয়েছে। এই দুটি টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন ১০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়া সম্ভব। মহেশখালী থেকে আনোয়ারা পর্যন্ত ৩০ ও ৪২ ইঞ্চি দুটি পাইপলাইনের যৌথ পরিবহন ক্ষমতা ১৫০ কোটি ঘনফুট। ফলস্বরূপ, এলাকায় আরেকটি ভাসমান টার্মিনাল স্থাপনের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব। এর জন্য অতিরিক্ত পাইপলাইন লাগানোর দরকার নেই। দুই টার্মিনাল স্থাপনের পূর্ব অভিজ্ঞতা দেখা যায় একটি এফএসআরইউ স্থাপন করতে ৩০ মাস সময় লাগে।
অন্য কথায়, যদি কার্যক্রম এখন শুরু হয়, তাহলে ২০২৩ সালে তৃতীয় টার্মিনাল থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
গত জুলাইয়ে জ্বালানি বিভাগে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।