• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    এক দফার আন্দোলনের আগে মাঠ গরম রাখবে বিএনপি

    সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন শুরুর আগে নেতাকর্মীদের শক্তিশালী করতে ধারাবাহিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে রয়েছে বিএনপি। জনসমস্যার ভিত্তিতে এসব কর্মসূচির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সমর্থন ও ঘনিষ্ঠতা পেতে চায় দলটি। গত জুলাই থেকে শুরু হওয়া এই ইস্যুভিত্তিক আন্দোলন এখন বিভাগীয় পর্যায়ে গণসংযোগ কর্মসূচিতে রূপ নিয়েছে, যা আজ বুধবার চট্টগ্রামে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে। দেশের ১০টি বিভাগে গণসমাবেশের ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সব মহলে গণসমাবেশ শেষে ঢাকায় গণসমাবেশ হবে।

    জানা গেছে, এর আওতাধীন ৮২টি সাংগঠনিক জেলা ও ইউনিটে এসব সমাবেশ সফল করতে দায়িত্বশীল নেতারা দফায় দফায় বৈঠক করছেন। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে ১০টি শক্তিশালী দল গঠন করা হয়েছে। যেখানে নির্বাহী কমিটির সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্যসহ জেলা নেতৃবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকদের রাখা হয়েছে। এর আগে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ৩০ লাখ লিফলেট ও ​​পোস্টার তৈরি করে সারাদেশে পাঠানো হয়। ‘একদলীয় আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও’ শিরোনামে লিফলেট ও ​​পোস্টারে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের হাতে নিহত নূর আলম, আবদুর রহিম, শাওন প্রধান, শহিদুল ইসলাম শাওন ও আবদুল আলমের ছবি রয়েছে।

    চট্টগ্রামের পর ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহ, ২২ অক্টোবর খুলনা, ২৯ অক্টোবর রংপুর এবং ৫ নভেম্বর বরিশাল, ১২ নভেম্বর ফরিদপুর, ১৯ নভেম্বর সিলেট, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী এবং অবশেষে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায়। গত ১ থেকে ৪ অক্টোবর গুলশান কার্যালয়ে এসব দপ্তরের সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ৮২টি সাংগঠনিক জেলার শীর্ষ দুই নেতার সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা।

    বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজন নেতা জানান, গণসমাবেশে সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণের বিষয়ে যা যা প্রয়োজন তা করার জন্য দলের হাইকমান্ড নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন। ওই বৈঠকের পর ইতিমধ্যেই সব সাংগঠনিক জেলার নেতারা নিজ নিজ এলাকায় চলে গেছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত টিমও বিভাগীয় প্রস্তুতিমূলক সভা করছে। জেলা শাখার নেতারাও সংশ্লিষ্ট থানা, উপজেলা, পৌরসভা ও ওয়ার্ডে কর্মপরিষদ শুরু করেছেন।

    বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিভাগীয় সমাবেশে গণসমাবেশের মাধ্যমে জনগণের উত্থান ফুটে উঠবে। সরকার এতে ভীত এবং ইতিমধ্যে তাদের সমাবেশে লোকের সংখ্যা কমানোর জন্য প্রশাসনকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। কিন্তু এটানে কাজ হবে না।

    বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সমাবেশ উপলক্ষে কেন্দ্র থেকে সব সাংগঠনিক জেলায় ২০ লাখ লিফলেট ও ​​১০ লাখ পোস্টার পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া জেলা নেতাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তারা স্থানীয়ভাবে পোস্টার ও লিফলেটও তৈরি করবেন। সমাবেশের আগে জনসচেতনতামূলক পোস্টার সাঁটানো হবে।

    বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, বিভাগীয় সমাবেশ নিয়ে বিএনপির মিডিয়া সেলেরও কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। সকল সমাবেশ মিডিয়া সেলের ভেরিফাইড পেজ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

    জানা গেছে, ১০টি বিভাগে সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলেও এসব সমাবেশ বাস্তবায়নে কেন্দ্র থেকে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। এ জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের উঠান বৈঠক, কর্মশালা, মতবিনিময় সভা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলা, মহানগর, থানা, উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতাদের তৃণমূল বিএনপিকে আরও সুসংগঠিত করে শক্তিশালী রাখতে বলা হয়েছে। ফলে সমাবেশ সফল করতে দলের প্রতিটি স্তরের সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে। অপরদিকে, উঠান বৈঠকের মতো নির্দেশনা দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে যুক্ত হবেন বলে মনে করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।

    বিএনপির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ বলেন, সম্প্রতি বিএনপির বিভিন্ন কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষ যেভাবে অংশগ্রহণ করছে তাতে তারা খুবই আশাবাদী। বিভাগীয় গণসভায় বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীও অংশ নেবেন।

    মন্তব্য করুন