একশ ফুট উঁচু পাহাড় কেটে ফেলা হয়েছে অর্ধেকের বিশি
নাগরী আকবর শাহ থানাধীন শাপলা আবাসিক এলাকার লইট্টা গোনায় দিনরাত পাহাড় কাটা হচ্ছে। প্রায় একশ ফুট উঁচু পাহাড়ের অর্ধশতাধিক অংশ ইতিমধ্যেই বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয়রা জানান, আব্দুল মালেকের মালিকানাধীন এই পাহাড়টি গত কয়েকদিন ধরে কাটা হচ্ছে, পাহাড় কাটার পাশাপাশি ভূমিধসের জন্য মোটর বসিয়ে দিনরাত পানি দেওয়া হচ্ছে।
দিনরাত কাটা হচ্ছে পাহাড়। আগে গোপনে পাহাড় কাটা হলেও এখন প্রকাশ্যে কাটা হচ্ছে। পাহাড়খেকোদের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে পাহাড়গুলো ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় চট্টগ্রামের পাহাড় ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে।
চট্টগ্রামে থেমে নেই পাহাড় কাটার উৎসব। কয়েকদিন বন্ধ থাকলেও আবারও শুরু হয়েছে পাহাড় কাটা। দীর্ঘদিন ধরে ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিংক রোডের আশপাশের পাহাড় কাটা হচ্ছে। ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিংক রোড থেকে ভাটিয়ারী-বরদিঘির পাড় লিংক রোড পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের জন্য বেশ কিছুদিন ধরে পাহাড় কেটে একটি শক্তিশালী চক্র কাজ করছে। পাহাড় কাটা নিয়ে বিস্তারিত সংবাদ প্রকাশের পর কয়েকদিনের জন্য নিষ্ক্রিয়তা বন্ধ ছিল। পরিবেশ অধিদপ্তর বায়েজিদ বোস্তামী থানায় গিয়ে মামলা করে। কিন্তু এরপর আর কিছুই হয়নি। পাহাড়খেকো চক্র নতুন উদ্যমে পাহাড় কাটা শুরু করে।
চট্টগ্রামের একটি প্রভাবশালী চক্র এখানে দিনরাত পাহাড় কাটছে। বায়েজিদ বোস্তামী থানায় দায়ের করা মামলার আসামি পাহাড়খেকোরা অধরা রয়েছেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, এলাকায় আবারও পাহাড় কাটা শুরু হয়েছে, একটি প্রভাবশালী চক্র নানাভাবে পাহাড় কাটছে। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন এ পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেও কোনো কাজ হয়নি। পাহাড়ে আবাসিক এলাকা নির্মাণসহ ব্যাপক বাণিজ্যের জন্য পাহাড়ে অভিযান অব্যাহত রেখেছে সংঘবন্ধ চক্র।
বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও বেলার নেটওয়ার্ক সদস্য আলীউর রহমান এবং বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল ল সোসাইটির বেলার চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়কারী মনিরা পারভীন গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের সিনিয়র কেমিস্ট রুবাইয়াত স্বরূপ ও কাট্টলীর এসি (ল্যান্ড) অফিসের সার্ভেয়ার মোহাম্মদ আবু ইউসুফ ইফতেখার উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের পক্ষে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক হিল্লোল বিশ্বাস এ তথ্য জানান। হিল্লোল বিশ্বাস বলেন, আমাদের না বুঝে পাহাড় কাটা হয়। আমরা যেখানেই তথ্য পাই সেখানে অভিযান পরিচালনা করি। এখানে পাহাড় কাটার অভিযোগ তদন্ত করে জড়িত দোষীদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। যেখানে তিনি পাহাড় কাটবেন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে ভয়াবহভাবে পাহাড় কাটা চলছে। কয়েক বছর আগেও চট্টগ্রামে প্রায় ২০০টি পাহাড় ছিল। গত চল্লিশ বছরে চট্টগ্রামের ৬০ শতাংশের বেশি পাহাড় বিলীন হয়ে গেছে।.