• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    একদিনে রেকর্ড ডলার বিক্রি বাংলাদেশ ব্যাংকের

    ব্যাংকগুলোর আমদানি দায় মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক একদিনে রেকর্ড পরিমাণ ডলার বিক্রি করেছে। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বাজারে ১৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার বিক্রি হয়েছে। ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রকরা এর আগে একদিনে এত বড় অঙ্কের ডলার বিক্রি করেনি। এর ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমে ৩৯ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের আগস্টে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছেড়েছে। এরপর ধীরে ধীরে গত মাসে এটি ৪০ বিলিয়নের নিচে নেমে আসে।

    জুলাই ও আগস্টে আমদানির জন্য এলসি খোলার পরিমাণ কমে গেলেও আগের আমদানি দায় মেটাতে কিছু ব্যাংকে এখনো ডলারের ঘাটতি রয়েছে বলে জানা গেছে। এ সংকট মেটাতে এবং টাকা-ডলার বিনিময় হার নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে। বিশেষ করে সরকারের বিভিন্ন আমদানিতে সংকট দেখা দিলে সে ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

    বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে ডলার বিক্রি করেছে ৯৫ টাকা দরে। যদিও ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকদের কাছে ডলারের রেট এর চেয়ে প্রায় ১০ টাকা বেশি। জানা গেছে, আমদানিকারকরা গতকাল ১০২ থেকে ১০৬ টাকা দরে ​​ডলার কিনেছেন। আর রপ্তানি ও রেমিটেন্সের বিপরীতে ব্যাংকগুলো রেট দিয়েছে ১০০ টাকা থেকে ১০৪ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের মৌখিক নির্দেশনা আছে ব্যাংক ডলার ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যে এক টাকার বেশি ব্যবধান থাকবে না।

    বাংলাদেশ ব্যাংক যে হারে ডলার বিক্রি করে, তার চেয়ে একটু বেশি দামে একটি ব্যাংক অন্য ব্যাংকের কাছে বিক্রি করে কিনা তা তদারকি রয়েছে। এ কারণে আন্তঃব্যাঙ্কে সাধারণত কোনো লেনদেন হয় না।

    বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গতকালসহ চলতি অর্থবছরের দুই মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে ২২৯ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। আর গত অর্থবছরে বিক্রি হয়েছে ৭৬২ মিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে ডলার বিক্রির বিপরীতে বাজারে আসছে প্রচুর অর্থ।

    বিশ্ব বাজারে ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দাম:

    বিশ্ববাজারে মার্কিন ডলারের মূল্য গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এর মূল কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রাস্ফীতি কমাতে সুদের হার বাড়ানোর ইঙ্গিত। সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

    প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন ডলার সূচক (USDX) কয়েকদিন ধরে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ১০৯.৪৮ পয়েন্টে পৌঁছেছে, যা গত দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০০২ সালে সূচক এমন উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল।

    USDX গণনা করা হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বৃহত্তম দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সহ ছয়টি দেশ ও অঞ্চলের মুদ্রার বিপরীতে মার্কিন ডলারের গড় বিনিময় হারের উপর ভিত্তি করে। বর্তমানে যে মুদ্রাগুলির উপর ভিত্তি করে এই সূচক গণনা করা হয় তার মধ্যে রয়েছে ইউরো, সুইস ফ্রাঙ্ক, জাপানিজ ইয়েন, কানাডিয়ান ডলার, ব্রিটিশ পাউন্ড এবং সুইডিশ ক্রোনা। ১৯৭৩ সালে এই সূচক চালু হয়। এর মাধ্যমে বিশ্ববাজারে ডলারের দাম বোঝা যায়।

    সম্প্রতি, মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান জেরোম পাওয়েল বলেছেন যে তারা মুদ্রাস্ফীতি কমাতে দীর্ঘমেয়াদে সুদের হার বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে পারে। তার ঘোষণার পর বিশ্ববাজারে লেনদেনে ডলারের বিপরীতে বিভিন্ন মুদ্রার দরপতন ঘটে।

    মন্তব্য করুন