উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যাপক গতি।সেপ্টেম্বর ৪.১৭ শতাংশ
উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডও করোনায় গতিশীল ছিল। এক মাস হিসাবে সেপ্টেম্বর শেষে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। মাসে বাস্তবায়নের হার ৪.১৭ শতাংশ। গত বছর একই সময়ে, এই হার ছিল ৩.৫৯ শতাংশ। যদিও তখন কোনও করোনার আক্রমণ ছিল না।, অর্থাৎ করোনা পূর্ব সময়ের তুলনায়ও বেশি হারে এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছে গেল সেপ্টেম্বরে।সাধারণত অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি খুব কম থাকে। তবে এবার অন্যরকম । সব মিলিয়ে এডিপি বাস্তবায়নের হারও গত তিন মাসে বেড়েছে। এই হার কভিডের আগের সময়ের একই সময়ের সমান। উভয় অর্থ বছরে, এই সময়ের মধ্যে এডিপি বাস্তবায়ন হার ছিল ৮দশমিক শূন্য শতাংশ। এডিপি বাস্তবায়নের আগের পাঁচ বছরে এই হার সবচেয়ে বেশি। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে জুলাই ও আগস্ট পর্যন্ত প্রয়োগের হার ছিল মাত্র ৩.৮৯ শতাংশ, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক কম। গত অর্থবছরের একই সময়ে বাস্তবায়নের হার ছিল ৪.৪৮ শতাংশ।
পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, তদারকি ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) অনুসারে জুলাই-আগস্টে এডিপিতে মোট ১৭,৩০১ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছিল। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ১৭ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। অর্থ ব্যয় কম হলেও সচ্ছল বাস্তবায়নের কারণ হল গত অর্থবছরের তুলনায় এবার এডিপিতে বরাদ্দ কম।
এডিপি বাস্তবায়ন বছরের শুরুতে ধীর হয়। এবার করোনার কারণে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে এই ধারা অব্যাহত ছিল। তবে সেপ্টেম্বরে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন গতি অর্জন করেছে।
জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, করোনায় স্থবিরতার পরে বিভিন্ন প্রকল্পের কর্মীরা ভালভাবে কাজে ফিরেছেন। সে কারণেই গতি এত বেড়েছে।
এ প্রসঙ্গে আইএমইডির সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এডিপির যথাসময়ে এবং মানসম্নত প্রয়োগকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। গত আর্থিক বছরে করোনায় কাজ কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। এসব কারণে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ এডিপির গুণগত মান,বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা মন্ত্রনালয়ের সচিবদের চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছেন। কয়েক মাস আগে আইএমইডির সচিব হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের এডিপি বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গত আগস্টে মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালকের সাথে বৈঠক করেন। আগের চেয়ে দ্বিগুণ গতিতে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবছরই আগের বছরের তুলনায় এডিপিতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়। তবে কভিডের কারণে সরকারী ব্যয় সাধনের নীতিমালার অংশ হিসাবে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে কম অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রয়োজনের কারণে পাঁচ শতাধিক কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজ স্ঞগিত রাখা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের জন্য এডিপি বরাদ্দ দুই লাখ ১৪ হাজার ৬১১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে মোট এডিপি প্রকল্পের সংখ্যা এক হাজার ৬৭৩টি। গত অর্থবছরে এই পরিমাণ ছিল দুই লাখ ১৫ হাজার ১১৪ কোটি টাকা।