উদ্যোগ।পিছিয়ে পড়া গ্রামে পরিবেশ জাদুঘর
একটি অনুন্নত এবং অনগ্রসর গ্রামে একটি ছোট বাড়ি। পাট, বাঁশসহ দেশীয় উপকরণ দিয়ে তৈরি। ভিতরের দেয়ালে পরিবেশগত বিভিন্ন বিষয়ের উপর ডকুমেন্টারি। বিভিন্ন উপকরণ টেবিলে রাখা হয়। এটি শাহিন রেজা রাসেলের পরিবেশ ও জলবায়ু জাদুঘর, একটি নিরাময়যোগ্য বেকার মাসকুলার ডিস্ট্রোফিতে আক্রান্ত যুবক। জাদুঘর ইতিমধ্যে সাড়া ফেলেছে। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসে জাদুঘরটি দেখতে।
জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা শাহিন রেজা মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে থাকেন। তিনি তার এলাকার নিকটবর্তী মদনপুর গ্রামে এটি নির্মাণ করেন। ২০০৪-০৫ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। পরে তিনি পরিবেশ পরিষদ নামে একটি সংগঠন গঠন করেন। ২০১১সালে, তিনি তার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। ২০১৩ সালে, তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীতে সহকারী পরিচালক হিসাবে কাজ শুরু করেন।
শাহিন রেজা রাসেল বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রতি তার অনুরাগ ছিল। আমি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করি তখন কোনো পরিবেশ সংগঠন ছিল না। ২০০৫ সালে পরিবেশ সংসদ গঠিত হয়। ২০০৮ সালে একটি পরিবেশ জাদুঘরের চিন্তা মাথায় আসে। করোনার সময় ঘরে বসেই ধারণাকে বাস্তবে রূপ দেওয়া সম্ভব হয়েছে।’
জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে মানুষকে জানাতে জাদুঘর স্থাপন করা। এই জাদুঘরে আসা নতুন প্রজন্ম পরিবেশ ও জলবায়ু সম্পর্কে তাদের সচেতনতা বাড়াবে। তারা পরিবেশ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব বুঝতে পারবে। তরুণরা পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা সহজ হবে।
শাহিন রেজা বলেন, ছোট বাড়ি হলেও তথ্যের ভাণ্ডার মোটেও ছোট নয়। ইতোমধ্যে বিভিন্ন সাগর ও নদী থেকে পানি সংগ্রহ করা হয়েছে। রয়েছে নানা ধরনের পাতা, বীজ ও কাঠের নমুনা, বিপন্ন পাখির বাসা। ফটোগ্রাফগুলিতে পরিবেশ এবং জলবায়ু সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য রয়েছে। আগামীতে প্রতিটি জেলায় দেশের প্রাণিকুল, নদীর পানি ও মাটির নমুনা সংগ্রহের ইচ্ছা রয়েছে। সমস্ত পরিবেশ উপাদান এখানে থাকবে। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন তথ্য পাবে।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ইতোমধ্যে জাদুঘর পরিদর্শনে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।