• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    উদ্বোধনকে ঘিরে বিশেষ সতর্কতা

    পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে ঘিরে কেউ যাতে বিভ্রান্তিকর তথ্য বা গুজব ছড়াতে না পারে সেজন্য সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে সাইবার টহল। প্রস্তুত ডগ স্কোয়াড; পুলিশের বিশেষ অস্ত্র ও কৌশল ইউনিট-সোয়াট তৈরি করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুলিশের বিভিন্ন বিশেষায়িত ইউনিটের সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আট হাজার সদস্য উপস্থিত থাকবেন। সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ইনস্টলেশনের উপর ঘনিষ্ঠ নজর রাখুন। পুলিশ সদর দফতরের একটি দল তদারকি করছে কে থাকবে পুরো অনুষ্ঠানের দায়িত্বে। আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর আশপাশে এবং রাজধানীতে যান চলাচলের জন্য আলাদা সময়সূচি তৈরি করা হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে সেতুটি নির্বিঘ্নে চালু করতে মঙ্গলবার থেকে সারাদেশে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

    পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (অপারেশন্স) হায়দার আলী খান বলেন, পদ্মা সেতু ঘিরে নানা গুজব ছড়ানো হয়েছে। শুরু থেকেই নানা ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে স্ব-অর্থায়নে নির্মিত এই সেতুটি। উদ্বোধনকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিদেশে বসবাসরত বাঙালিরাও অভিভূত। এমন জমকালো অনুষ্ঠান সফল করতে দেশজুড়ে ব্যাপক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সেতু উদ্বোধনের স্থান ছাড়াও ৬৪ জেলার পুলিশ সুপারদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। গতকাল পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

    আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরেক কর্মকর্তা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে সেতুর উত্তর তীরে এক সমাবেশে ভাষণ দেবেন। এরপর প্রথমে টোল দিয়ে সেতু পার হবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সেতুর দক্ষিণ পাড়ে মাদারীপুর পুরাতন ফেরি টার্মিনাল এলাকায় জনসভায় ভাষণ দেবেন। উদ্বোধনকে ঘিরে লঞ্চ ও নৌকায় বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম হবে। সমাবেশে অন্তত ১০ লাখ মানুষ যোগ দেবেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। জমকালো উদ্বোধনকে ঘিরে এরই মধ্যে বসানো হয়েছে নিরাপত্তা ছক। বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (SSF) এবং প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ড রেজিমেন্ট (PGR) বিশেষ নিরাপত্তায় থাকবে। এছাড়াও থাকবে পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল, সোয়াট, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), নৌ পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ। এ ছাড়া র‌্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে। মুন্সীগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলা পুলিশকে সহায়তার জন্য দেশের অন্যান্য ইউনিট থেকে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হবে।

    নিরাপত্তা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত একজন কর্মকর্তা জানান, সেতুটি উদ্বোধনের কারণে শিমুলিয়া ঘাট থেকে মাঝিরকান্দি, কাঁঠালবাড়ি ও বাংলাবাজার পর্যন্ত ফেরি চলাচল ২৫ জুন বন্ধ থাকবে। পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ থেকে এই রুটের যাত্রীদের অনুরোধ করা হয়েছে। ওই দিন পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুট ব্যবহার করতে হবে।

    উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনেক ভিআইপি পদ্মা সেতু এলাকা পরিদর্শন করবেন বলে জানা গেছে। ঢাকা থেকে সেতু এলাকায় তাদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় বাড়তি ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মনিবুর রহমান বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর অনেক যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ করবে। ঢাকা থেকে পদ্মা সেতুতে যান চলাচল আবার বাড়বে। এ কারণে ঢাকায় কীভাবে গাড়ি আনা হবে তা নির্ধারণ করতে রাজধানীর আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয় সভা করেছে ডিএমপি। সামনে আরেকটি মিটিং আছে। গাড়ির প্রবেশ এবং প্রস্থান রুটে এটিই হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। হাতিরঝিল ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে।

    পুলিশের ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগের ডিসি সাইদুর রহমান বলেন, সেতুটি চালু হলে দোলাইরপাড়, পোস্তগোলা, যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান ও চানখারপুল এলাকায়ও যানবাহনের সংখ্যা বাড়বে। ফ্লাইওভার দিয়ে এসব এলাকায় যানবাহন নামবে। গাড়ির চাপ দেখে দুর্ভোগ লাঘবে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আর পোস্তগোলা সেতুতে দীর্ঘদিন ধরে যে ঐতিহ্যবাহী টোল আদায় করা হচ্ছে তা আর নেই। পোস্তগোলা সেতুর টোল প্লাজা ওই রুটের আরেকটি সেতুর টোল প্লাজায় নেওয়া হবে।

    এতে দেশি-বিদেশি অতিথিরা উপস্থিত থাকবেন।

    মন্তব্য করুন