উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠে ঘরবাড়িতে ফাটল, ৬০০ পরিবারকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ
ভারতের উত্তরাখণ্ডের জোশিমঠ এলাকায় বাড়িঘরে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ প্রায় ৬০০ বাড়ির বসবাসকারী লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শহরটি ধীরে ধীরে ধসে যাচ্ছে।
শুক্রবার একটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠকের পর, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি বলেছেন যে ফাটল রয়েছে এমন প্রায় ৬০০ বাড়িতে বসবাসকারী লোকদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের জন্য বড় বড় আশ্রয় শিবির খোলা হবে।
“জীবন বাঁচানো আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার,” মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী শহরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার পরে একটি ভিডিও কনফারেন্সে সাংবাদিকদের বলেছেন। বিপজ্জনক বাড়িতে বসবাসকারীদের দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হিন্দুদের যোশীমঠ শহর হয়ে চারধামে যেতে হয়। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী চারধামে যান। ওই যাত্রাপথে যে রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ চলছিল তা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জোশীমঠ এলাকায় যাবতীয় নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেসব হোটেলে ফাটল দেখা গেছে সেখানে পর্যটকদের থাকতে নিষেধ করেছে সরকার।
যারা এখনো নিজ বাড়িতে বসবাস করছেন তারা যে কোনো মুহূর্তে তাদের বাড়িঘর ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় দিনযাপন করছেন। এমনকি প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যেও, বৃষ্টি হলেই তারা ঘর থেকে বের হচ্ছে, কারণ বৃষ্টিতে ভূমিধসের প্রবণতা বেশি।
উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের প্রধান রঞ্জিত কুমার সিনহা বলেন, ‘যেসব পরিবারের ঘরে বড় ধরনের ফাটল ধরেছে বা যাদের বাড়ি সম্পূর্ণ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে আমরা তাদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছি।’
বৃহস্পতিবার রাতে শেষ বড় ফাটল লক্ষ্য করা গেছে। তবে গত অক্টোবরে প্রবল বৃষ্টির পর থেকে জোশীমঠের বাড়িঘর ও রাস্তাঘাটে ফাটল দেখা দিতে শুরু করে।
হিমালয়ের নাজুক এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অপরিকল্পিতভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণসহ অন্যান্য নির্মাণের চাপ পাহাড়িরা আর নিতে পারছে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্থানীয় কর্মী অতুল সতী বলেন, ‘শুধু জোশিমঠ এলাকায় নয়, উত্তরাখণ্ডের পুরো পাহাড়ি এলাকায় একই অবস্থা। এই অঞ্চলের পর্বতগুলো খুবই নাজুক, সমগ্র হিমালয়ই একেবারে নতুন পাহাড়। তার উপরে এই অঞ্চলকে একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহ্য করতে হচ্ছে।’
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি জিওলজিক্যাল সার্ভে, ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট এবং আইআইটি রুরকির বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেছেন তা তদন্ত করতে।