ইসলামের পুনরুজ্জীবন ঘটেছে আহলে বায়তে রাসুলের আত্মত্যাগে
শাহাদাতে কারবালা মাহফিলে আহলে বায়তে রাসুল প্রেমী জনতার ঢল নেমেছে জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ প্লাজায়। গতকাল শুক্রবার নবম দিনে দেশী বিদেশী আলোচকদের আলোচনা শুনতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসেন সুন্নি জনতা। শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদ দশদিন ব্যাপী এ মাহফিলের আয়োজন করেছে।
গতকাল মুখ্য আলোচক ছিলেন ইরাক বাগদাদ শরিফের বড় পীর হযরত সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানী (রা) এর বংশধর শাহসুফি সৈয়দ আফিফ আব্দুল কাদের মনসুর আল জিলানী (মজিআ)।
তিনি বলেন, দ্বীন ইসলামের স্বকীয় বৈশিষ্ট্য অক্ষুণœ রাখতেই নবী দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইনের (রা) নেতৃত্বে আহলে বায়তে রাসূল (দ) কারবালার যুদ্ধে ইয়াজিদের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। কারবালার যুদ্ধ ছিল অসত্য, অন্যায়, মিথ্যা ও নাহকের বিরুদ্ধে সত্য প্রতিষ্ঠার আদর্শিক সংগ্রাম। আহলে বায়তে রাসুলের (দ) আত্মত্যাগের সিঁড়ি বেয়েই আমরা দ্বীন ইসলামের মহানেয়ামত পেয়েছি। দ্বীন ইসলামের পুনরুজ্জীবনই ঘটেছে কারবালা ট্র্যাজেডির মাধ্যমে।
গতকালের মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন মাহফিল পরিচালনা পর্ষদ ও পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
হযরত ইমাম হোসাইন (রা) ও মুসলিম ইবনু আকিল: প্রসঙ্গ কারবালা বিষয়ে আলোচনা করেন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আল্লামা মুফতি আলাউদ্দিন জিহাদী। তিনি বলেন, কারবালা ময়দানে হযরত ইমাম হোসাইন (রা) ও আহলে বায়তে রাসূলের (দ) ওপর যে জঘন্য নির্মমতা দেখিয়েছে ইয়াজিদ, দুনিয়ার ইতিহাসে এই বর্বরতার দ্বিতীয় নজির নেই। হযরত ইমাম মুসলিম বিন আকিল ও তার দ্ইু পত্রকে নৃশংসভাবে খুন করেছে ইয়াজিদি দুরাচারিরা। তাই ইয়াজিদিদের অন্তর দিয়ে ঘৃণা করা এবং আহলে বায়তে রাসূলের (দ) ভালোবাসার নামই হচ্ছে ঈমান।
আলোচক ছিলেন জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের সাবেক পেশ ইমাম আল্লামা নূর মোহাম্মদ সিদ্দিকী।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। আমরা আহলে বায়তে রাসূলের (দ) মহব্বত হৃদয়ে গভীরভাবে ধারণ করি বলেই এই শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের আয়োজন করে আসছি। আপনারা অভুক্ত মানুষকে খাওয়াবেন, পরিচিত অপরিচিত ছোট বড় সকলকে সালাম দেবেন। সালাম মানেই শান্তি। ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে সালামের প্রচলন করতে পারলে অশান্তি হিংসা বিদ্বেষ থেকে আমরা নিষ্কৃতি লাভ করতে পারবো।
মাহফিল সঞ্চালনা করেন চবি অধ্যাপক ড. আল্লামা জাফর উল্লাহ ও জমিয়তুল ফালাহর পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আহমদুল হক। কুরআন মজিদ থেকে তেলাওয়াত করেন ক্বারী আহমদ বিন ইউসূফ আল আজহারী।
অতিথি ছিলেন ছিপাতলী জামেয়া গাউছিয়া মুঈনিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল্লামা আবুল ফরাহ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন, গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের শাহসুফি সৈয়দ সহিদুল হক মাইজভান্ডারী, হযরত আমানত শাহ (রহ.) দরগাহ্ শরীফের মুতাওয়াল্লী শাহজাদা শরফুদ্দীন মুহাম্মদ শাহীন, শিল্পপতি আবুল বাশার মুকুল, পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক জহিরুল ইসলাম রিংকু।
গতকাল শুক্রবার ইন্তেকাল করেন শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের মহাসচিব সামজসেবক সৈয়দ মুহাম্মদ আবদুল লতিফ। তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনায় মাহফিলে মুনাজাত করা হয়। আজ শনিবার বেলা ১১ টায় জমিয়তুল ফালাহ মাসজিদ মাঠে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এতে সবাইকে অংশগ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে।
এছাড়া মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের শীর্ষস্থানীয়সহ সর্বস্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন দরবারের সাজ্জাদানশীন, আওলাদবৃন্দ, বিভিন্ন মাদ্রাসার আলেমরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া মাহফিলের প্রধান সমন্বয়ক পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক মোহাম্মদ আলী হোসেন সোহাগ, খোরশেদুর রহমান, মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক, সিরাজুল মুস্তফা, মুহাম্মদ সাইফুদ্দিন, জাফর আহমদ সওদাগর, প্রফেসর কামাল উদ্দিন আহমদ, আব্দুল হাই মাসুম, দিলশাদ আহমদ, নুর মোহাম্মদ, মোহাম্মদ ইদ্রিস, জামাল উদ্দিন, ছালামত উল্লাহ, মনসুর সিকদার, এস এম শফি, ইদ্রিচ চেয়ারম্যান, মাহাবুবুল আলম, নাজিব আশরাফ, মুহাম্মদ আব্দুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।