ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা।আক্রমণের তীব্রতা কমেছে, আলোচনার দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে
বিরতিহীন গোলাবর্ষণ সত্ত্বেও, ইউক্রেনীয় এবং রাশিয়ান বাহিনীর পাল্টা আক্রমণের তীব্রতা হ্রাস পেয়েছে। সোমবার আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। শান্তি আলোচনায় দুই পক্ষের মনোযোগের খবর সামনে এসেছে।
রাশিয়ার সামরিক বাহিনী পরিবর্তন, সফর শেষে জো বাইডেনের দেশে ফিরে আসা, রাশিয়ান সাংবাদিকদের সাথে ভলোদিমির জেলেনস্কির সাক্ষাৎকার এবং ভ্লাদিমির পুতিন ও রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের মধ্যে ফোনালাপের পরিপ্রেক্ষিতে এই অগ্রগতি হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বেলজিয়াম এবং পোল্যান্ড সফরের আগে, উভয় পক্ষ মস্কো এবং কিয়েভ প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা জানিয়েছে। বাইডেনের সফরকে ঘিরে যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আলোচনায় স্থবিরতা সৃষ্টি করেছে। ইউরোপ ত্যাগের পর দুই পক্ষের আবার বৈঠকের তারিখ ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন যে তাদের প্রতিনিধিরা মঙ্গলবার তুরস্কে মুখোমুখি শান্তি আলোচনায় বসবেন। ক্রেমলিনও একই ধরনের তথ্য দিয়েছে। বিষয়টি তুরস্কের পক্ষ থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে।
রোববার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের মধ্যে ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এরদোগান তখন পুতিনকে যুদ্ধবিরতি ও শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করার আহ্বান জানান। তাদের আলোচনার পর জলেনস্কি তুরস্কের পক্ষে বক্তব্য রাখেন। জেলেনস্কি বলেন, মঙ্গলবার রুশ প্রতিনিধিরা তুরস্কে তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
জেলেনস্কি রোববার রাশিয়ান সাংবাদিকদের একটি সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখে তিনি রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি চুক্তিতে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। যাইহোক, জেলেনস্কি বলেছেন যে চুক্তিটি অনুমোদনের জন্য একটি তৃতীয় পক্ষ জড়িত থাকবে এবং চুক্তিটি চূড়ান্ত হওয়ার আগে ইউক্রেনে একটি গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।
জেলেনস্কি রাশিয়ান সাংবাদিকদের আরও বলের ইউক্রেনের রুশ-ভাষী জনগোষ্ঠীর ভাষার অধিকার রক্ষা করা হবে। প্রথমবারের মতো, জেলেনস্কি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে ইউক্রেনের নিরস্ত্রীকরণে মস্কোর দাবি তারা মেনে নেবে না।
ভূ-রাজনীতি ও কূটনৈতিক সম্পর্কের কারণে পুতিন ও জেলেনস্কির শান্তি আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তুরস্কের ওপর আস্থা রয়েছে। ফ্রান্সের ভূমিকা একই থাকলেও তুরস্কের ওপর দুই দেশের আস্থা রয়েছে।
গতকাল ইউক্রেনের বড় শহরগুলোতে বড় ধরনের কোনো হামলার খবর পাওয়া যায়নি। তবে ইউক্রেন রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে মারিউপোল গোলাবর্ষণের অভিযোগ করেছে। রোববার রাতে ডনবাস এলাকায় হামলার জন্য দুই পক্ষ পরস্পরকে দায়ী করছে। এদিকে ইউক্রেনের এক মন্ত্রী রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও লুটপাটের অভিযোগ করেছেন। তবে অভিযোগের স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি তিনি।
মস্কো নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় অ-বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের নাগরিকদের রাশিয়ায় প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দূতাবাসগুলোকে ওইসব দেশের নাগরিকদের ভিসা না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।