• বাংলা
  • English
  • জাতীয়

    আ.লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সভা।‘বারবার এমপি হলেও এবার মনোনয়ন পাবেন, তা হবে না’

    প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী নির্বাচনে এমপি দলীয় মনোনয়ন নাও পেতে পারেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় প্রার্থী বাছাই করতে জরিপ চালাচ্ছেন বলে জানান তিনি।  গ্রহণযোগ্য প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পাবেন।

    তিনি বলেন, দলের বিভিন্ন কমিটিতে টাকা নিয়ে আসার অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগের তদন্ত হওয়া উচিত। টাকা না থাকায় আত্মত্যাগী ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাদের কমিটিতে রাখা হবে না- এটা ঠিক নয়।

    গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে শেখ হাসিনা আরও বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন খুবই কঠিন হবে; প্রতিযোগিতামূলক হবে। তারা এখন ‘না’ বললেও বিএনপি নির্বাচনে আসবে। কারণ বিএনপি অভ্যন্তরীণভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাই নির্বাচনকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই।

    সভায় আগামী ২৪ ডিসেম্বর শনিবার আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়। ওইদিন সকাল ১০টায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিসহ ১১টি উপ-কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে দায়িত্ব দেন যত দ্রুত সম্ভব দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের দিয়ে কমিটি করতে। তবে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর কারণে সংবর্ধনা উপ-কমিটিতে পরিবর্তন আসবে। সম্মেলনের আগে প্রধানমন্ত্রী দলের গঠনতন্ত্র ও ইশতেহারকে যুগোপযোগী করতে সংশোধনের ওপর জোর দেন।

    বৈঠকে আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর দলের জাতীয় কমিটির সভা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই বৈঠকে দলের বাজেট অনুমোদন করা হবে। আগামী ২১ ও ২২ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

    এর আগে সভার সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে বলেই বিএনপি আজ প্রতিবাদ করতে পারছে। কিন্তু বিএনপির যারা খুনের সঙ্গে জড়িত; অগ্নিসংযোগে জড়িত; জঙ্গিবাদে জড়িত; তাদের ধরতে হবে। তাদের কোনো ছাড় নেই।

    জাতীয় কাউন্সিলের জন্য সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করতে হবে। কয়টি উপকমিটি করতে হবে? কিন্তু যেহেতু বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা চলছে; ফলে আমরা কোনো আড়ম্বর ও পরিস্থিতিতে এই সম্মেলন করব না। আমাদের খুব সীমিত পরিসরে সহজভাবে সম্মেলন করতে হবে।

    তিনি বলেন, আমরা দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমরা এটা করবো. আমার কথা হলো- আমাদের উন্নয়নের কথা জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে হবে এবং ভবিষ্যতের জন্য যে পরিকল্পনা নিয়েছি তাও জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে।

    শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির শাসনামলে তারা লুটপাট, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা, নির্যাতন, খুন-খুনের মতো কোন  অপরাধ তারা করেননি। মহান মুক্তিযুদ্ধে জয়ী হয়ে তারা বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে ভিক্ষুকের দেশে পরিণত করেছিল। সেখান থেকে বাংলাদেশকে এনে আজ একটি আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছি। সারা বিশ্বের মানুষ বাংলাদেশকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে।

    প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনী সভা শেষে বিকাল সাড়ে ৪টায় তার সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয়। প্রায় ছয় ঘণ্টার বৈঠকে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বক্তব্য দেন। শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন দলের মহাসচিব ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। দায়িত্বপ্রাপ্ত আট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, সফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও সাখাওয়াত হোসেন শফিক নিজ নিজ বিভাগের সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

    এছাড়া সারাদেশে দলের সাংগঠনিক অবস্থা পর্যালোচনা, মেয়াদোত্তীর্ণ অধিভুক্ত সংগঠনের সম্মেলন এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি, কৌশল নির্ধারণসহ একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    জেলা থেকে জেলা সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী : বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলা থেকে জেলা সফরে যাবেন। এখন থেকে দলকে আরও বেশি সময় দেবেন বলে জানান তিনি। সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয় করে জেলায় জেলায় সভা-সমাবেশ করবেন। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সিলেট থেকে এই জেলা সফর শুরু করবেন।

    মন্তব্য করুন