আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন সংশোধন করা হচ্ছে: পরিচালকদের ক্ষমতার লাগাম টানা হবে
সংশোধনের মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন কঠোর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই সেক্টরের প্রতিষ্ঠানগুলিতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সংগঠন পরিচালনায় বোর্ডের প্রভাব হ্রাস পাবে। তাই পরিচালকের সংখ্যা, একই পরিবার থেকে পরিচালকের সংখ্যা এবং শেয়ার ধারনের হার কমানো হচ্ছে।এ ছাড়া ব্যক্তি ও আমানতকারীদের মধ্যে পরিচালকের সংখ্যা বাড়ানো হবে। এই প্রক্রিয়াটির মাধ্যমে বোর্ডের উদ্যোক্তা পরিচালকদের ক্ষমতার লাগাম টানা হবে।
এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক আইনটির একটি সম্পূর্ণ কাঠামো তৈরি করেছে অনেক আগেই। তবে বিষয়টি বেশিদূর যায়নি। গত কয়েক বছরে, অভূতপূর্ব লুটপাটের কারণে ১১ টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান লাল তালিকায় পড়েছে। একটি সংস্থাকে অবসায়নের করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলস্বরূপ, এই খাতের গ্রাহকদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের সংকট দেখা দিয়েছে।
প্রচলিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনও সম্পূর্ণ নয়। খুব সংক্ষিপ্ত আইন নিয়ে চলছে। তবে যে কোনও ধরণের বিধি তৈরি করার ক্ষমতা বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়া হয়েছে। ফলস্বরূপ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মকানুন করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করছে। ইতোমধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এখন ৩৩টি তাদের ঋন এবং আমানতের পরিমাণও বেড়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমানতকারীদের রক্ষায় একটি বিস্তৃত আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন কার্যকর করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড়াও বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফিনান্স কোম্পানীস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) প্রতিনিধিরা উপস্থিত রয়েছেন। বিএলএফসিএ একটি খসড়া আইনও তৈরি করে বাংলাদেশ ব্যাংকে দেবে। তারা এই লক্ষ্যে কাজ করছে।বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফিনান্স কোম্পানীস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) সভাপতি ও আইপডিসি ফিনান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোমিনুল ইসলাম বলেছেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আদেশ আনার জন্য আইনটি সংশোধন করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে কাজ চলছে। সংস্থায় বোর্ডগুলির স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি উদ্যোক্তা পরিচালকদের যাতে একক কর্তৃত্ব না হয় সেজন্য আমানতকারী এবং স্বতন্ত্র পরিচালক থাকার বিধান রাখা হচ্ছে। একই সঙ্গে পরিচালকদের শেয়ার হোল্ডিং হ্রাস করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সূত্র মতে, সংশোধিত আইনটি কোনও ব্যাংকিং কোম্পানির মতোই হবে। বর্তমানে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনে প্রচুর শিথিলযোগ্যতা রয়েছে। এটি সংশোধিত আইনে থাকবে না। ব্যাংকে একই পরিবারের সর্বাধিক ৩ জন পরিচালক থাকতে পারেন। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৪ জন থাকতে পারে। সংশোধিত আইন এই সংখ্যা কমাতে দু’জনের প্রস্তাব করবে। কোনও ব্যাংকের একজন পরিচালক টানা তিনটি মেয়াদ (এক মেয়াদ তিন বছর) অর্থাত নয় বছর থাকতে পারে। একই নিয়ম আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সংশোধিত আইনটি টানা দুই মেয়াদে বাড়ানো হচ্ছে। একজন পরিচালক টানা দুই বছরের তিন বছরে৬ বছর থাকতে পারেন। এর পরে তিনি এক মেয়াদ অর্থাৎ তিন বছরের বিরতি নিয়ে পরিচালক পদে ফিরে আসতে পারবেন।এ ছাড়া সংশোধিত আইনে আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পরিচালকের স্বার্থে প্রতিষ্ঠানের নামে বোর্ডের কাছে ঋন প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে সংশ্লিষ্ট পরিচালক প্রস্তাবের পক্ষে কথা বলতে পারবেন না।