জাতীয়

আমলাতন্ত্রে ঝুঁকি বাড়ছে। কোনও কাঠামোগত শৃঙ্খলা নেই

মাঠ প্রশাসনে সমন্বয়ের অভাব। একক স্তরের পদ বিপরীতে অফিসার সংখ্যা। ১০৪ জন অতিরিক্ত সচিবের অনুমোদিত পদের বিপরীতে কর্মকর্তা সংখ্যা। ৫৫৪. যুগ্ম সচিবের ৪৮৩টি পদের বিপরীতে অফিসার সংখ্যা। ৭৪৩। উপসচিবের ৮০০ পদের বিপরীতে কর্মকর্তা রয়েছেন ১ হাজার ৬৩৬।গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী শাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ প্রশাসন ও আমলাতন্ত্রে ঝুঁকি বাড়ছে। কাঠামোগত শৃঙ্খলা অনেক আগে চলে গেছে, এখন নানা দল উপদল গোষ্ঠীতে বিভক্ত আমলাতন্ত্র হারাচ্ছে ঐতিহ্যগত শৃঙ্খলা। ক্ষেত্রবিশেষ ঊর্ধ্বতনের আইনানুগ মানবিক অনেক আদেশ নির্দেশ অধস্তনদের দ্বারা উপেক্ষিত হবার নজির তৈরি হচ্ছে। ব্যক্তিগত অসদাচরণ বা শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনাও বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে পুরো প্রশাসনের প্রতি মানুষের প্রত্যাশা সঙ্কুচিত হয়ে যাবে এবং অনেক ক্ষেত্রে প্রশাসন এর গুরুত্ব হারাবে। জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় করা বর্তমান আমলাতন্ত্রের জন্য একটি বড় ঝুঁকিপূর্ণ উচ্চ পদস্থ আমলারা নিজেরার মতে, বর্তমানে আমলাতন্ত্রের সাথে জনগণের প্রতিনিধিদের বিশেষত মাঠ প্রশাসনের সাথে সমন্বয় কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।

প্রকৃতপক্ষে, ১৯৮৫ সাল থেকে প্রশাসনের কোনও পূর্ণ কাঠামোগত সংস্কার হয়নি এক ধরণের স্বায়ত্তশাসিত ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে, যার দ্বারা প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। পদ না থাকলেও প্রশাসনের পদোন্নতির বোঝা বহন করতে লড়াই চলছে। অনেক অসহায় মানুষের মতো কর্তৃপক্ষকেও পদোন্নতির বোঝা বহন করতে হচ্ছে। কারণ যোগ্যদের পদোন্নতি তাদের অধিকার। তবে প্রশাসনের কাঠামোগত শৃঙ্খলা পদোন্নতি বা সংস্কারের কোনও উদ্যোগ না নিয়ে এই কাজটি কার্যত ভিত্তিতে বাস্তবিকভাবে অস্তিত্বহীন।

চলতি নভেম্বর মাসের তথ্যচিত্র অনুযায়ী ১০৪টি অতিরিক্ত সচিবের মঞ্জুরিকৃত পদের বিপরীতে কর্মকর্তার সংখ্যা ৫৪৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪৬৪ জন এবং নারী ৮১ জন। যুগ্ম সচিবের ৪৮৩টি পদের বিপরীতে কর্মকর্তার সংখ্যা ৭৪৩ জন। নারী ১০৫ জন এবং পুরুষ ৬৩৮ জন। উপসচিবের ৮০০ পদের বিপরীতে কর্মকর্তা রয়েছেন ১ হাজার ৬৩৬ জন। এখন আবার ২৭ ব্যাচ কর্মকর্তাদের উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সহসাই এ পদে কর্মকর্তার সংখ্যা আরো বাড়বে। উপসচিবের বর্তমান কর্মকর্তাদের মধ্যে ১ হাজার ২৮৯ জন পুরুষ এবং ৩৪৭ জন নারী রয়েছেন।

এক প্রবীণ কর্মকর্তা বলেন, প্রশাসন ক্যাডারে সিনিয়রদের প্রতি জুনিয়রদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর রীতি এখন অনেকটাই বিবর্ণ। উচ্চতর ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত শৃঙ্খলা প্রদর্শন করার অনুশীলনটি এখন অনেকের মধ্যে লক্ষ্য করা যায় না।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ড. ফরহাদ হোসেন বলেন, সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সরকারী কর্মচারী আইন আছে। এই আইনের অধীনে প্রবিধান তৈরির কাজ চলছে। এগুলি কার্যকর করা হলে, সমস্ত কিছু স্বাভাবিক হবে। তাঁর মতে, মাঠপর্যায়ে জনপ্রতিনিধিদের সাথে আমলাদের বিদ্যমান সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন। এগুলি মানসিকতার উপর নির্ভর করে। এটির সামগ্রিক প্রতিক্রিয়া নেই।জন প্রশাসন মন্ত্রনালয়ের সচিব শেখ। ইউসুফ হারুন বিষয়টি নিয়ে একমত হয়েছেন

মন্তব্য করুন