• বাংলা
  • English
  • রাজনীতি

    আদালতে  ফাঁসির দাবি কাঠগড়ায় কাঁদলেন দীপু মনি

    মঙ্গলবার বিকাল ৩:২৫ মিনিট পুলিশ, আইনজীবী ও গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালত প্রাঙ্গণ মুখরিত ছিল।  সাদা মাইক্রোবাসে করে আদালতে আনা হয় তিনবারের সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও সাবেক উপ-যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী আরিফ খান জয়কে।

    আদালত প্রাঙ্গণে তাদের উপস্থিতি দেখে আইনজীবীরা স্লোগান দিতে থাকেন। তারা বলতে থাকে, ‘দীপু মনির দুই গালে জুতা মারো, তালে তালে’। তাদের বহনকারী গাড়িটি সিএমএম কোর্টের গেটে প্রবেশ করলে এক ব্যক্তি রাস্তার ওপর শুয়ে পড়েন। তিনি দীপু মনির ফাঁসি দাবি করেন। পরে সেখান থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। এ সময় কয়েকজন গাড়িতে ধাক্কা মারে। তাদের সরিয়ে দিলে ভিড় ঠেলে দুই আসামিকে কোর্ট সেলে নিয়ে যাওয়া হয়।

    বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে দীপু মনি ও জয়কে সিএমএম আদালতের দ্বিতীয় তলার একটি আদালত কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় আসামিদের পরনে ছিল হেলমেট ও বুলেট প্রুফ জ্যাকেট। দ্বিতীয় তলায় ওঠার সময় পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে দীপু মনি ও জয়কে মারধরের চেষ্টা করেন আইনজীবীরা। তবে জয়ের শরীরে কয়েকটা থাপ্পড় লাগে।

    সেখানে আইনজীবীরা ‘ফাঁসি চাই, দীপু মনিরের ফাঁসি চাই’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। হট্টগোলের মধ্যে দুই অভিযুক্তকে আদালতের ২৮ নম্বর এজলাসের কাঠগড়ায় ওঠানো হয়।

    এরপর আইনজীবীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে চিৎকার করতে থাকেন।

    কাঠগড়ায় জয় সামনের দিকে মুখ করছিলেন আর দীপু মনি উত্তর দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় দীপু মনিককে কাঁদতে দেখা যায়। কিন্তু জয় চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল।

    ৫ মিনিটের মধ্যে বিচারক আদালতে হাজির হন। কিন্তু আদালতে তখনও হৈচৈ ছিল। অনেক আইনজীবী কাঠগড়ায় দীপু মনি ও জয়ের ভিডিও করছিলেন। দেখতে দেখতে ক্লান্ত দীপু মনি আদালতে এসে পুলিশের কাছে পানি চাইলেন। তবে আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় তাকে পানি পান করতে দেওয়া হয়নি।

    আদালতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মহসিন মিয়া, ইকবাল হোসেন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক আইনজীবীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনো ফল না হওয়ায় ওই অবস্থায় শুনানি শুরু হয়। তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে পরিদর্শক আসাদুজ্জামান ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। এ সময় আসামিদের হাতে হাতকড়া কেন নেই, তা জানতে চান আইনজীবীরা। পুলিশ জানায়, জয়কে হাতকড়া পরানো হয়েছিল এবং দীপু মনি নারী হওয়ায় তাকে হাতকড়া পরানো হয়নি।

    রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্যের পর আসামিদের পক্ষে একজন আইনজীবী ‘রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করছি’ মর্মে জবানবন্দি দিলে আদালত আদেশ লেখা শুরু করেন। তখন অভিযুক্ত জয় কিছু বলতে থাকে। কিন্তু বিকট শব্দে বিচারক কিছুই শুনতে পাননি। তাই পুলিশ তাকে বাধা দেয়। ওই অবস্থায় আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন।

    মুদি ব্যবসায়ী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সাবেক পররাষ্ট্র, শিক্ষা ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনিকে ৪ দিনের এবং সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়কে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম সুলতান সোহাগ উদ্দিন রিমান্ডের আদেশ দেন।