• বাংলা
  • English
  • খেলা

    আজ আর্জেন্টিনা ফ্রান্স ফাইনাল।পায়ের জাদু নাকি চিতার গতি

    ফিফা  সারা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের বিশ্বকাপের গল্প শোনাতে ২৮ দিনের বেশি সময় নেয়নি। এই বিশ্বকাপ আরবি উপন্যাসে রহস্য ও ধাঁধা কম ছিল না। ফাইনালকে ঘিরে দোহার প্রাণকেন্দ্রে যেভাবে মেসিমানিয়া চলছে তা দেখতে কৌতূহলী – তবে মরুভূমিতে এই বিশ্বকাপের সমাপ্তিও কি আবেগ এবং ভালবাসার স্বীকৃতির বিস্ফোরণে শেষ হবে? ৩৫ বছর পর আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতবে, নাকি টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফুটবলের মুকুট থাকবে ফ্রান্সের কাছে? পশ্চিমা মিডিয়ায় এই ফাইনালটি মেসি বনাম এমবাপ্পে নামে পরিচিতি পেয়েছে। আজ ট্রফি জিততে পারলে মেসির আধিপত্য প্রশ্নাতীতভাবে পূরণ হবে। অন্যদিকে, পেলের সাথে তুলনা চলে আসবে আজ যখন এমবাপ্পে ট্রফি তুলবেন। দুই তারকার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াইয়ের অপরিসীম মাধ্যাকর্ষণে উত্তপ্ত কাতারের মরুভূমি। আর তা দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে পুরো ফুটবল বিশ্ব।

    তারা যেমন মেসির বাঁ পায়ের জাদু দেখতে চায়, তেমনি এমবাপ্পের চিতার গতিও দেখতে চায়। চতুর গ্রিজম্যান যেমন তাদের অর্ধ-লাইন থেকে সরিয়ে দেয়, তেমনি এমিলিয়ানো মার্টিনেজের ঈগলের মতো স্ট্রাইকও রয়েছে। আক্রমণের ধরনে, রক্ষণে, মিডফিল্ডে বল দখলে – উভয় পক্ষই এত সমানভাবে ওজনযুক্ত যে সামান্য হাওয়া উভয় দিকেই কাত হয়ে যায়। তাই সবাই সত্যিই দারুণ একটি ফাইনাল উপভোগ করতে যাচ্ছে। গতকাল মিডিয়া সেন্টারের ক্লিনসম্যান ও আর্সেন ওয়েঙ্গার আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স ম্যাচের ফ্লেভার দেখাচ্ছিলেন। তবে দুজনেই অন্তত একটি বিষয়ে একমত, আর্জেন্টিনা ফ্রান্সের চেয়ে বেশি আবেগী। দোহাতে এই মুহুর্তে, প্রায় ৪০,০০০ আর্জেন্টাইন তাদের পাসপোর্টে আগমন স্ট্যাম্প নিয়ে শহরের চারপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাদের সাথে, অনেক এশিয়ান এবং আফ্রিকান মেসির ১০ নম্বর জার্সি পরে মেট্রোতে স্প্যানিশ সুর গাইছেন, তাদের আলাদা করা যায় না। দেশ-বিদেশের এত মেসি ভক্তের চোখ এড়ায়নি ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশচ্যাম্পস। “দর্শকরা ম্যাচ জিতবে না, মাঠে থাকা ১১ জন খেলোয়াড়কে ম্যাচ জিততে হবে। আমরা চ্যাম্পিয়ন, আমরা আগামীকাল চ্যাম্পিয়নদের মতো খেলব।’ গতকাল সাংবাদিকদের সামনে শান্ত কন্ঠে এই হুমকি দেন ফরাসি কোচ।তবে দলের পাঁচ খেলোয়াড় জ্বরে ভুগছেন, যাকে পশ্চিমা গণমাধ্যম বলছে ‘ক্যামেল ফ্লু’।ফরাসকে প্রায় আশা ছেড়ে দিতে হয়েছে। ফাইনালে রাবিওট সহ সেই পাঁচ জনকে পাওয়া।তবে বিশ্বকাপের আগে বেনজেমা সহ এমন পাঁচজন খেলোয়াড়কে ছাড়াই কাতারে এসেছিল।এমবাপে, গিরুদ এবং গ্রিজম্যান দলে থাকলে বাকি জায়গা নিয়ে খুব একটা চিন্তা করেন না দেশম। এবারের বিশ্বকাপে ফ্রান্সের যাত্রা শুরু হল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম গোল দিয়ে।এরপর থেকে ফরাসিরা শুধু গোলমুখে আক্রমণ করেছে।তবে রিজার্ভ বেঞ্চে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে তিউনিসিয়ার কাছে হারতে হয়েছে।তবে সেমিফাইনাল ম্যাচে তাদের সঙ্গে। ফ্রান্সের রক্ষণভাগের দুর্বলতা ধরা পড়ে মরক্কোর কাছে।

    এখন পর্যন্ত, দুই দল ১২ বার মুখোমুখি হয়েছে, আর্জেন্টিনা ৬ বার এবং ফ্রান্স ৩ বার জিতেছে। তা ছাড়া সম্প্রতি উয়েফা নেশনস লিগের গ্রুপ পর্বে শীর্ষে থাকতে পারেনি ফ্রান্স। কিন্তু মঞ্চ যখন বিশ্বকাপ আর দল ফ্রান্স, দেশচ্যাম্প ও এমবাপ্পে জুটি- তখন আর্জেন্টিনা ভক্তদের ‘মেসি আবেগ’-এর বাইরে ভাবতে হয়। তবে এই বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হেরে আসল ধাক্কা খেয়েছে আর্জেন্টিনা। এরপর মেক্সিকোর বিপক্ষে মেসির ৬৪তম মিনিটের গোলটি আর্জেন্টিনাকে পুনর্জন্ম দেয়। মেক্সিকো, পোল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস ও ক্রোয়েশিয়াকে একে একে হারিয়ে এখন আত্মবিশ্বাসের শীর্ষে রয়েছে ল্যাটিন দেশটি। ব্রাজিল সর্বশেষ বিশ্বকাপ জিতেছিল ২০০২ সালে। এরপর কোনো ল্যাটিন দেশ বিশ্বকাপ জিততে পারেনি। হয়তো সে কারণেই মেসির হাতে কাপ তুলে দিতে চান ব্রাজিলের সাবেক অধিনায়ক কাফুও। ২০১৪ সালে, মেসির দক্ষতায় আর্জেন্টিনা ফাইনাল খেলে। এবার মেসি একা নন, তার ব্রিগেডে আছেন আলভারেজ ও এনজো ফার্নান্দেজ।

    মন্তব্য করুন