আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আসছে
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন আসছে। এ জন্য দলের জেলা ও উপজেলা পর্যায় এবং তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে দলের গঠনতন্ত্রকে আরও আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শনিবার প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের গঠনতন্ত্র উপ-কমিটির বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উপকমিটির আহ্বায়ক মো. আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে সভায় দলের সাংগঠনিক কাঠামো বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। তবে সাংগঠনিক কাঠামো না বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন প্রায় সব নেতাই।
আগামী ২৪ ডিসেম্বর শনিবার সকাল ১০টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের দিনব্যাপী ২২তম জাতীয় কাউন্সিলে প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্র চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করা হবে। কাউন্সিলররা তা অনুমোদন করবেন। এর আগে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদ আলোচনা করে জাতীয় কাউন্সিলে অনুমোদনের জন্য সংবিধানের খসড়া তৈরি করবে।
দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সংবিধানে কী ধরনের পরিবর্তন আনা যায়’, গতকাল দলের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের অনলাইনে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তারা প্রস্তাব পাঠাবে। প্রস্তাবটি নিয়ে আগামী বৈঠকে আলোচনা হবে।
আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটিতে চার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আট সাংগঠনিক সম্পাদক রয়েছেন। এর মধ্যে একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দুই বিভাগে এবং প্রত্যেক সাংগঠনিক সম্পাদক একটি বিভাগে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। ভবিষ্যতে পদ্মা ও মেঘনা নামে দুটি নতুন বিভাগ গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে।
উপ-কমিটির গতকালের বৈঠকে অধিকাংশ নেতা জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত পদ্মা ও মেঘনা বিভাগে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম দেখাশোনার জন্য একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দুজন সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ সৃষ্টি হতে পারে। এই প্রস্তাব জাতীয় কাউন্সিলে অনুমোদন পেলে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ হবে পাঁচজন। সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থাকবে ১০টি। অর্থাৎ সাংগঠনিক কাঠামো না বাড়ানো হলে দলের কার্যনির্বাহী সদস্যদের তিনটি পদ কমবে।
বর্তমানে কার্যনির্বাহী সদস্যের সংখ্যা ২৭ জন। এর মধ্যে আ. জাহাঙ্গীর হোসেন ও বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের মৃত্যুতে দুটি পদ শূন্য রয়েছে। আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতি, প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক, বিভাগীয় সম্পাদক, উপসম্পাদক, কার্যনির্বাহী সদস্যসহ মোট সদস্য সংখ্যা ৮১ জন। এদের মধ্যে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ও অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু মারা যাওয়ায় সভাপতিমণ্ডলীর চারটি পদ শূন্য রয়েছে।
উপ-কমিটির প্রথম বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। কর্নেল (অব.) ফারুক খান, দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দুই সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাখাওয়াত হোসেন শফিক, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার ড. বিপ্লব বড়ুয়া ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শামসুল আলম মোহন।