• বাংলা
  • English
  • বিবিধ

    অপহরণকারী ভিক্ষার জন্য বাচ্চার চেহারা বিকৃত করে দেয় এবং ছয় দিন পরে তাকে উদ্ধার করে

    মোসাম্মত সুমা তার দুই বছরের মেয়েকে নিয়ে মোহাম্মদপুরের আজিজ খান রোডে থাকেন। সে কাগজ সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে। তিনি উপার্জিত অর্থ দিয়ে সংসার চালান।

    ২৫ এপ্রিল, সুমা তার শিশু রাশিদা আক্তারের সাথে কাগজ কুড়াতে। ঘোরা ফেরা করার পরে বিকেলে পুরান ঢাকার বংশাল চৌরাস্তা যান। সংগৃহীত কাগজের বস্তা বড় হওয়ার  সুমা তার মেয়েকে নিজের হাতে ধরে রাখতে পারল না। তাই কাগজ আর ভাঙারি বিক্রি করতে রাস্তার পাশে রেখে গিয়েছিলেন ।  ফিরে দেখেন তার রাশিদা নেই!

    মোসাম্মত সুমা তখন পথচারীদের সহায়তায়  পুলিশের সহায়তা নেন। তিনি বংশাল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ছয় দিন পরে শনিবার পুলিশ কেরানীগঞ্জের কদমতলী শহীদ নগর এলাকার একটি বাড়ি থেকে ছোট্ট রাশিদাকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়।

    ছোট রাশিদা অপহৃত হয়েছিল, পুলিশ জানিয়েছে। অপহরণের পরে তাকে নির্যাতন করা হয় এবং তার চেহারাটি বিকৃত করে দেওয়া হয়।

    অপহরণে জড়িত নীলা বেগম (৩০) কে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। নীলার দশ বছরের মেয়েকেও হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

    বংশাল থানার হেফাজতে থাকা নীলা জানান, তিনি ভিক্ষা করেন। শিশুটিকেও (রাশিদা) ভিক্ষা করাতে  রাস্তায় থেকে তুলে নেওয়া হয়। এরপরে তিনি জনগণের সহানুভূতি পেতে তাকে মারধর করে তার চোখ এবং নাক স্ফীত করেন। শিশুটিকে নিয়ে ভিক্ষা শুরু করে নীলাও ।

    নীলা বলল, লোকেরা কোলে কোথাও এমন শিশুকে দেখলে লোকেরা বেশি ভিক্ষা দেয়। অসুস্থ দেখতে সক্ষম হওয়া মানুষের মমতাও বাড়ায়।

    বংশাল থানার ওসি মো. শাহীন ফকির  জানান, লালবাগ বিভাগের ডিসি বিপ্লব বিজয় তালুকদার জিডি হওয়ার পরে নিখোঁজ শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য একটি চার সদস্যের দল গঠন করেন। দলটি তখন আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে উৎসের মাধ্যমে নিখোঁজ শিশুটির সন্ধান শুরু করে। একপর্যায়ে কেরানীগঞ্জের কদমতলী এলাকায় নীলা বেগমের কাছ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। নীলা শিশুটিকে অপহরণ এবং ভিক্ষা করার কথা স্বীকার করেছে, তিনি জানান। ওসি জানান, নীলার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়েছে।

    লালবাগের অপর এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নীলা বেগমের স্বামী তাকে দুই বছর আগে ছেড়ে চলে গেছেন। এর পর থেকে ভিক্ষা করে সংসার চালাচ্ছিলেন । তার চার সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে বড় ১০ বছর বয়সী। চারজন তার সন্তান কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। এজন্য নীলার সাথে থাকা চার সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ।

    মন্তব্য করুন