সহকর্মীর মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জের মদনপুরে কারখানায় নারী শ্রমিক অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ সহকর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। এতে মহাসড়কের উভয় লেনে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। যাত্রীরা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) সকাল ১০:১৫ মিনিটে উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের লরিজ ফ্যাশন নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে।
এ প্রসঙ্গে শিল্প পুলিশের পরিদর্শক (গোয়েন্দা) সেলিম বাদশা আমাদেরকে জানান, গতকাল রবিবার (২ নভেম্বর) রাতে লরিজ ফ্যাশন নামে একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত রিনা (৩০) নামে একজন সুইং মেশিন অপারেটর হঠাৎ করে পড়ে যান। রাত ৯:৩০ মিনিটের দিকে তার সহকর্মীরা এবং কর্মীরা তাকে চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী ইশা খা ক্লিনিকে নিয়ে যান, সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠান। পরে, তাকে জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শ্রমিকদের দাবি, তাকে সময়মতো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। নিহত রিনা কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার দুলাল মিয়ার মেয়ে।
এদিকে, রাস্তা অবরোধকারী শ্রমিকরা দাবি করছেন যে, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিক দায়ী। অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও তারা তাদের ছুটি দেননি এবং চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন। মালিকদের কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তারা আন্দোলন শুরু করেছেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ‘ল্যারিস ফ্যাশন’-এর সিও শিমুল বলেন, “গতকাল আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই তিনি মারা যান। এটি আমাদের অবহেলা নয়। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি এবং মৃত্যুর পর দাফন সম্পন্ন করার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তা আমাদের কোম্পানিই করেছে। তবে, আমাদের কোম্পানির শ্রমিকরা দাবি করছেন যে, ওই তলার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের বরখাস্ত করা হোক। আমরা তাতেও একমত হয়েছি। কিন্তু তারা এখনও আন্দোলন শুরু করেছেন।”
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, শ্রমিকরা তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য পোশাক মালিকদের দায়ী করার দাবিতে রাস্তা অবরোধ করেছেন। পরে শিল্প পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং র্যাব সহ সকল বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান, শ্রমিকদের বুঝিয়ে দুপুর ১২:১৫ টার দিকে তাদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

